প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রথম পছন্দ দেশীয় এয়ারলাইন্স
দেশে আকাশ পথে যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক, উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবসা সফল দেশের এভিয়েশন সেক্টর। এভিয়েশনে উন্নত যাত্রীসেবা, সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট বিক্রি, দেশীয় এয়ারলাইন্সের ক্রুদের আতিথেয়তা, বিদেশি এয়ারলাইন্সের ক্রুদের ভাষা না বোঝাসহ নানাবিধ কারণে দেশীয় এয়ারলাইন্সে ভিড় জমাচ্ছের প্রবাসী শ্রমজীবীরা। এখন প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রথম পছন্দ দেশীয় এয়ারলাইন্স।
খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অব্যাহত যাত্রী সংকটের কারণে বাংলাদেশের বাজারে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো একের পর তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে (যদিও এক সময় তাদের ব্যবসা ছিল একচেটিয়া)। এখন নতুন করে বাংলাদেশের বাজারে আসতেও ভয় পাচ্ছে নতুন বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো।
দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর প্রতি যাত্রী আগ্রহের বিষয়টিকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাবেক পরিচালনা পর্ষদ সদস্য কাজী ওয়াহিদুল আলম। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২০টি বিদেশি এয়ারলাইন্স বিদায় নিয়েছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ব্যবসা করে দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলো। আর বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলো একাধিক গন্তব্যের যাত্রী বহন করে। তারপরও তারা বাংলাদেশে এসে টিকে থাকতে পারেনি। ব্যবসা গুটিয়ে চলে যেতে হয়েছে তাদের।
বিমান সূত্রে জানা যায়, বিদায় নেয়া এয়ারলাইন্সের মধ্যে রয়েছে- ওমান এয়ার, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, কোয়িয়ান এয়ার, সংযুক্ত আরব আমিরাতের আরএকে এয়ারওয়েজ, এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস, সিঙ্গাপুরের টাইগার এয়ারওয়েজ, ব্যাংকক এয়ারওয়েজ, মিহিন লঙ্কা, গালফ এয়ারওয়েজ, রয়্যাল ডাচ এয়ারলাইন্স-কেএলএম।
চলতি বছরের শুরুতে অব্যাহত লোকসান আর যাত্রী সংকটের কারণে অপারেশন বন্ধ করে এয়ার ইন্ডিয়া। গত বছরের মার্চে দুবাই-ঢাকা-চট্টগ্রাম-দুবাই রুটে অপারেশন বন্ধ করে দেয় ফ্লাই দুবাই। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাতের এয়ারলাইন্স ইতিহাদ এয়ারওয়েজও বিদায় নেয়। গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এয়ারলাইন্সটি।
বর্তমানে ঢাকা-সিঙ্গাপুর রুটে মোট তিনটি দেশি ও একটি বিদেশি এয়ারলাইন্স সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলো হলো- বিমান বাংলাদেশ এযারলাইন্স, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও রিজেন্ট এয়ারওয়েজ। আর বিদেশি একমাত্র এয়ারলাইন্স হলো- সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স।
চলতি বছরের মে মাস থেকে সিঙ্গাপুর রুট থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয় স্কুট এয়ারলাইন্স। হঠাৎ করেই ঢাকার কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয় সিঙ্গাপুরভিত্তিক এই এয়ারলাইন্সটি। গত ২৯ এপ্রিল ঢাকা-সিঙ্গাপুর রুটে সর্বশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করে এয়ারলাইন্সটি।
এদিকে আর্থিক সংকটে উড়োজাহাজ না থাকায় গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ফ্লাইট স্থগিত করে ভারতের জেট এয়ারওয়েজ। পরে তারাও ব্যবসা গুটিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জাগো নিউজকে বলেন, নানা কারণে বাংলাদেশের এভিয়েশন ব্যবসা লাভজনক নয়। কিন্তু চাহিদার দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাজার।
তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে প্রথম পছন্দ দেশীয় এয়ারলাইন্স। কারণ, এখানে নিজের ঘরের মতো মনে হয়। দেশের এয়ারলাইন্সে নিজ ভাষায় ক্রুদের কাছে নিজেদের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন, কথা বলতে পারেন তারা।
আরএম/জেডএ/জেআইএম