কোনো রোহিঙ্গার এনআইডি পাওয়ার সুযোগ নেই : এনআইডি ডিজি
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেছেন, ভোটার তালিকাভুক্ত করার জন্য নিবন্ধিত নাগরিকদের তথ্য সার্ভারে আপলোড যখনই হচ্ছে, তার আগে পর্যায়ক্রমে চেক করে আপলোড দেয়া হবে। তাদেরকে রোহিঙ্গা সার্ভারে আবার চেক করে মূল সার্ভারে আপলোড দেয়া হবে। সুতরাং কোনো রোহিঙ্গার এনআইডি পাওয়ার সুযোগ নেই। অন্য কোনো জায়গা থেকে ফাঁকি দিয়ে এলেও আমাদের সার্ভার ফাঁকি দিতে পারবে না, উদ্বেগের কিছু নেই। আমরা সতর্ক।
সম্প্রতি পুলিশের গুলিতে নিহত এক রোহিঙ্গা ডাকাতের কাছে স্মার্টকার্ড পাওয়া যায়। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকাভুক্ত ও জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়ার খবর প্রকাশিত হচ্ছে সংবাদমাধ্যমে। তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বর্তমানে ভোটার তালিকাভুক্ত দেশের ১০ কোটি ৮২ লাখেরও বেশি নাগরিকের তথ্য রয়েছে ইসির তথ্যভাণ্ডারে। সেই সঙ্গে হালনাগাদের আরও ৮০ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ চলছে দেশজুড়ে। আর রোহিঙ্গাদের প্রায় ১১ লাখ বায়োমেট্রিক ডেটা রয়েছে সরকারের কাছে।
তিনি বলেন, ভোটার তালিকাভুক্ত করার লক্ষ্যে নাগরিকদের তথ্য এবং আঙুলের ছাপ রোহিঙ্গা ডেটাবেজে ‘ক্রসম্যাচ’ করেই নির্বাচন কমিশনের মূল তথ্যভাণ্ডারে নেয়া হবে। কোনোভাবেই ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ যাছাই ছাড়া কারও তথ্যভাণ্ডারে নিবন্ধিত করা হবে না।
ব্রিগেডিয়ার সাইদুল বলেন, তারা কিন্তু আইডি পায়নি। কেবল ডেটা আপলোড করেছে; আমাদের এএফআইএস (অটোমেটেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম) ম্যাচিংয়ে তারা ধরা পড়েছে। এরপর আমরা ব্লক করে দিয়েছি।
তাদেরকে ভোটার তালিকাভুক্ত করে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহের পথ করে দেয়ায় সংশ্লিষ্ট দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান এনআইডি ডিজি।
রোহিঙ্গাদের এনআইডি সংগ্রহের অপতৎপরতা রোধের বিষয়ে এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক বলেন, এসব বন্ধে আমরা আরও উদ্যোগ নিচ্ছি। আমরা এখন অ্যানালাইসিস করছি কীভাবে এটা আপলোড হলো। বিশেষ এলাকা চট্টগ্রাম। বিশেষ কমিটি রয়েছে ভোটারদের তথ্য শনাক্তের জন্য। বিশেষ কমিটির বাইরের কারও মাধ্যমে তারা এলো কি না; কারা যুক্ত, কারা দায়-দোষী এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে এ জন্যে উদ্যোগ গ্রহণ করছি। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেব।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম জানান, রোহিঙ্গা বা কোনো বিদেশি নাগরিক বা দ্বৈত নাগরিককে ভোটার তালিকাভুক্ত করার সুযোগ নেই। তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া যাবে না। এটার জন্য যা করার দরকার তাই করা হবে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামকে বিশেষ এলাকাভুক্ত করা হয়েছে। জেলা ও থানা পর্যায়ে সব ধরনের প্রতিনিধিকে নিয়ে বিশেষ কমিটি করা হয়েছে।
রোহিঙ্গা ডাকাত নূর মোহাম্মদ কীভাবে ভোটার হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান এনআইডি উইং ডিজি।
মহাপরিচালক বলেন, সে ভোটার হয়েছে, এনআইডি পেয়েছে; স্মার্টকার্ডও ২০১৬ সালে হয়েছে। তখন তো সার্ভার এত উন্নত ছিল না। সুতরাং কীভাবে ভোটার হয়েছে, কারও কোনো প্রশ্রয় পেয়েছিল কি না তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। এ নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এইচএস/বিএ