আমাদেরও পারতে হবে


প্রকাশিত: ০৩:১০ এএম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

প্রতি বছরই কোরবানির পশুর বর্জ্য এক মহা সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। পরিবেশ দূষণ ছাড়াও যত্রতত্র পড়ে থাকা বর্জ্যের দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়ে। সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরও বেগ পেতে হয় বর্জ্য অপসারণে। এ কারণে দীর্ঘদিন থেকেই দাবি ছিল সুনির্দিষ্ট জায়গায় পশু কোরবানি করার। আশার কথা হচ্ছে এ বছর ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ-এই দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকেই সুনির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ জন্য পাঁচ শতাধিক স্থান নির্বাচন করে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলের উচিত হবে সুনির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি করে সিটি কর্পোরেশনকে সহযোগিতা করা।

প্রতিবছরই রাজধানীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে কোরবানির পশু জবাই করার পর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে বর্জ্য।  লাখ লাখ পশু কোরবানি দেওয়ার পর বর্জ্য পরিষ্কার করতে দুই সিটি কর্পোরেশনই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। বাতিল করা হয় সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটিও। কিন্তু এর পরও বর্জ্য পরিষ্কার হয় না ঠিকমতো। ফলে কোরবানির পর দীর্ঘ সময় দুর্গন্ধ থেকেই যায়। মানুষজনকে নাকে রুমাল চেপে চলাচল করতে হয়।  

এই বাস্তবতা মাথায় রেখেই দুই সিটি কর্পোরেশন সুনির্দিষ্ট জায়গায় পশু কোরবানির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। পশু জবাইয়ের জন্য ডিএসসিসি ও ডিএনসিসি মিলে ৫৩৫টি স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর মধ্যে ডিএসসিসিতে ৩২৭টি এবং ডিএনসিসিতে ২০৮টি স্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনাররা এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।

কিন্তু এই মহৎ উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে যদি সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা না পাওয়া যায়। বিশেষ করে যারা পশু কোরবানি করবেন তাদের এটা মেনে চলা উচিত। কারণ কোরবানির যে মহৎ উদ্দেশ্য ত্যাগ, সেটি কেবল পশু জবাই আর মাংস খাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর একটি সামাজিক দিকও আছে। যত্রতত্র পশু জবাইয়ের কারণে যদি লোকজনের অসুবিধা হয় সেই কাজ  ধর্মীও অনুশাসন অনুযায়ীও ঠিক নয়।   

নানাবিধ কারণে রাজধানী ঢাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপেও বসবাস অনুপযোগী শহরের তালিকায় ঢাকা মহানগরী শীর্ষে। কাজেই এই শহর যাতে বসবাসের উপযোগী থাকে সেটির দায়িত্ব কেবল সরকার, সিটি কর্পোরেশন বা অন্য কোনো সংস্থার নয়। সাধারণ নাগরিকদের দায়িত্বও এখানে কম নয়। বাসা-বাড়ির সামনে, অলিতে গলিতে পশু কোরবানি না করে সুনির্দিষ্ট জায়গায় করলে বর্জ্য অপসারণ যেমন সহজ হবে তেমনি নগরবাসী বর্জ্যের দূষণ ও দুর্গন্ধ থেকেও মুক্তি পাবে।

উন্নত বিশ্বে পশুর সব  ধরনের উচ্ছিষ্ট প্রক্রিয়াজাত করে কাজে লাগানো হয়। আমরাও তা পারি। এই শহরকে পরিষ্কার রাখা আমাদের দায়িত্ব। সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগকে  অন্যভাবে না দেখে এ ব্যাপারে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়াই হবে নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। গণমাধ্যও এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজটি করতে পারে।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।