রোববার গাবতলী, ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযান
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী রোববার থেকে গাবতলী বাস টার্মিনালের অবৈধ দখল ও স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে নামবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। চলতি মাসের ২০ তারিখ থেকে শুরু হবে ডিএনসিসির ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযান।
গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত নগর ভবনে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। ডিএনসিসির ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৩০৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
গাবতলীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘গাবতলী বাস টার্মিনালের মধ্যে যেসব অবৈধ স্থাপনা আছে সেগুলো আমরা সরিয়ে ফেলব। গাবতলীর প্রধান সড়ক যে বাসগুলো থাকে তা ভেতরে ঢুকে যাবে। এটা একটি চ্যালেঞ্জ।’
‘আমার সঙ্গে ওই এলাকার সংসদ সদস্য, কাউন্সিলর, বাস ও ট্রাক মালিক সমিতির নেতাদের কথা হয়েছে। সবাই বলেছেন, আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমার বিশ্বাস আমরা গাবতলীকে ঠিক করতে পারব। রোববার অথবা সোমবার থেকে আমাদের এ অভিযান শুরু হবে’ বলেন ডিএনসিসির মেয়র।
ফুটপাত দখলমুক্তর করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ফুটপাত দখলমুক্ত করা। আমরা মশা নিধনের জন্য যেভাবে চিরুনি অভিযান চালিয়েছি কাউন্সিলরদের নিয়ে ঠিক সে রকম অভিযান চলবে ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য।’
মেয়র আরও বলেন, ‘আগামী ২০ সেপ্টেম্বর থেকে এ অভিযান শুরু হবে। ২০ সেপ্টেম্বর থেকে আমার অফিস আমি গাড়ির মধ্যেই করব। আমি মনে করি জনগণ আমাদের সাপোর্ট দেবে। কারণ এ ফুটপাত করেছি আমরা জনগণের জন্য। এ ফুটপাতে কোনো ধরনের অবৈধ স্থাপনা থাকতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘২০ তারিখ থেকে কীভাবে আমরা থাকব, কীভাবে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করব, কীভাবে আমাদের কাউন্সিলররা থাকবেন। আমি ডিএমপির সঙ্গে আলোচনা করেছি। ডিএমপির বর্তমান পুলিশ কমিশনার থেকে সবাই বলেছেন, আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।’
মেয়র আতিকুল বলেন, ‘নিরাপদ থাকার জন্য ঢাকা শহরের বড় চ্যালেঞ্জ লাইট। আমাদের অনেক জায়গায় বাতি নেই। বাতি থাকলেও পর্যাপ্ত আলো দিতে পারছে না। আগামী বছরের প্রথম থেকে আমরা ঢাকা শহরে প্রায় ৪২ হাজার বাতি লাগানোর প্ল্যান করেছি। প্রত্যেকটি এলাকায় এলইডি বাতি জ্বলবে। আমি চেষ্টা করছি বাতিগুলো ইউরোপ অথবা আমেরিকা অথবা জাপান থেকে আনতে। অন্য কোনো দেশ থেকে আমি আনার চেষ্টা করব না।’
নিরাপত্তার জন্য অ্যাপসের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে ডিএনসিসির মেয়র বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য আমরা কিছু ধরনের অ্যাপস তৈরি করছি। শহরে যদি নারীরা চলেন, বাচ্চারা যদি যায় তাদের সবার কাছে একটি অ্যাপ দেয়া থাকবে। তারা যদি কোনো সমস্যায় পড়েন তাহলে অ্যাপসে চাপ দিলে তাদের বাবা-মা অথবা তিনজন বন্ধু ও আত্মীয়স্বজন জেনে যাবেন।’
আতিকুল বলেন, ‘সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে বাজেটে নিজস্ব উৎস ও সরকারি অনুদানে সড়ক, ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ৩৬৩ কোটি টাকা, কবরস্থান-শ্মশানঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন খাতে ৭ কোটি ২৫ লাখ, পার্ক ও খেলার মাঠ উন্নয়নে ৪ কোটি, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে ৭৬ কোটি ৭৫ লাখ এবং পরিবেশ উন্নয়নে ২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ডিএনসিসির নিজস্ব অর্থায়নে ৪৫ কিলোমিটার সড়ক, ৪০ কিলোমিটার নর্দমা এবং ১০ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ, উন্নয়ন ও সংস্কার করা হবে। এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ডিএনসিসির নিজস্ব অর্থায়নে ও বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ১২ হাজার ৯২৮টি এলইডি বাতি স্থাপনসহ ৫টি ফুটওভার ব্রিজ, দুটি পার্ক, তিনটি খেলার মাঠ, তিনটি কবরস্থান, ১০টি পাবলিক টয়লেট ও একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ ও সংস্কার করা হবে।’
এমএএস/এনডিএস/এমকেএইচ