‘পাটের নৌকা উপহার দিয়ে বিশ্বব্যাংককে বিদায় করেছি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৩৬ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

অর্থসহায়তা দেয়ার প্রস্তাব দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করে বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তাদের একটি পাটের নৌকা উপহার দিয়ে বিদায় করে দিয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম আয়োজিত ‘প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতৃত্বে শেখ হাসিনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মন্ত্রী বলেন, ‘সব পর্যায়ের বৈষম্য দূর করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। যেই বাংলাদেশে ১ শতাংশও শিক্ষার হার ছিল না মেয়েদের, সেখানে এখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে শুধু ৫৩ শতাংশ ছাত্রী।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর যে দেশে আমরা যাই যেখানেই তারা জিজ্ঞেস করে, আমাদের একটু শিখাইয়া দাও কেমন করে সামনে যেতে হয়। এই সামগ্রিক রূপান্তরটা এর পুরোটাই হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।’

‘শেখ হাসিনার হাতে বাংলাদেশ যদি থাকে তবে বাংলাদেশকে অন্যদের অনুসরণ করতে হবে। এর বিকল্প আমি অন্তত চোখে দেখি না।’

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘যে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে টাকা দেয়নি, সেই বিশ্বব্যাংক আইসা বলছে, তোমাদের টাকা-পয়সা দেই দু-একটা প্রজেক্ট কর না কেন? আমি ওরে বলে দিয়েছি, তোমার টাকার আর দরকার হবে না, থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ। একটা পাটের নৌকা উপহার দিয়া বিদায় করে দিয়েছি। এটিই বাংলাদেশ, আমরা সেই জায়গায় পৌঁছেছি।’

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘সেপ্টেম্বর মাসের ২৮ তারিখ ইচ্ছা করলেও প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি গিয়ে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে পারি না। তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। তিনি শুধু আমার প্রধানমন্ত্রী সহকর্মী নন এখন। খুব গর্বের সঙ্গে বলি আমরা দুজন একসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করেছি।’

‘আমরা স্মৃতিতে যখনই তাকে নিয়ে আলোচনা করার প্রশ্ন আসে, তখনই একটু সেদিকে চলে যাই। আমি স্মরণ করি ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের দোতলায় বাংলা বিভাগে এক ভদ্র নারী একদম ফড়িংয়ের মতো উড়ে বেড়াতেন। তার একটি সাদামাটা আটপৌরে তাঁতের শাড়ি থাকত। মুখের মধ্যে কোনো দিন স্নো, পাউডার, লিপস্টিক দিয়েছেন- এটি আমার স্মৃতিতে পড়ে না। আমাদের এই সময়কালে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী ছিলেন; তারা কেউ গ্রাম থেকে এসেছেন, মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছেন, নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছেন। তাদের সঙ্গে যে সময়টা তিনি কাটিয়ে এসেছেন, তাদের কারো পক্ষে বলা কঠিন ছিল, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা যে জীবন-যাপন করতেন সেখানে তিনি অতি সাধারণ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে মিছিল মিটিং থেকে শুরু করে ছাত্রলীগের সব কর্মকাণ্ডে উপস্থিত থাকতেন। একজন সদ্য বিবাহিত নারী তার ছাত্রজীবন ও সংসার জীবন একসঙ্গে কেমন করে যে সমন্বয় করে চলছেন, সেটি স্মৃতিচারণ করতে গেলে আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়।’

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ভিত্তিটা বঙ্গবন্ধু স্থাপন করেছিলেন জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ যে লাঙ্গল-জোয়ালের দেশ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বলার মতো একটা পরিস্থিতিতে যাবে সেই সূচনাটা বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে।’

বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও কলামিস্ট এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, সাবেক সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, কলামিস্ট ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহম্মদ মাহবুব আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফোরামের সদস্য সচিব অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস।

আরএমএম/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।