দুর্নীতি রোধে সিসিটিভির আওতায় আসছে ভূমি অফিস
দুর্নীতিমুক্ত ভূমি সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের ভূমি অফিসগুলোকে সিসিটিভির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘সিসিটিভির মাধ্যমে মন্ত্রণালয় থেকেই ভূমি অফিসের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হবে।’
রোববার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মাঠ পর্যায়ে সহকারী ভূমি কমিশনারদের (এসি ল্যান্ড) ডাবল কেবিন পিকআপ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা জানান মন্ত্রী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘সিসিটিভি স্থাপনের জন্য ডিপিপির প্রক্রিয়া চলছে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ভূমি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ করবে। আমি আশা করি, আগামী বছরের কোনো এক সময়ে সিসিটিভি স্থাপনের কাজ শেষ করা যাবে।’
উপস্থিত ভূমি সহকারী কমিশনারদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘কেবিন পিকআপ দেয়ার মূল উদ্দেশ্য আপনারা যেন আপনাদের আওতাধীন এলাকার ভূমি অফিসগুলো ঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন এবং প্রয়োজনে আকস্মিক পরিদর্শন করতে পারেন। সেইসঙ্গে যেন সরকারি অন্যান্য দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে মাঠ পর্যায়ে একটি গুণগত পরিবর্তন আনতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘এ গাড়ি কারও বাপের বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি বা তেল পোড়ানোর জন্য দেয়া হয়নি। গাড়ি মূলত অফিসের কাজের জন্য দেয়া হয়েছে। সুতরাং আমি আশা করব, এ কাজগুলো যাতে সুন্দরভাবে করা হয়। আপনাদের আরও বেশি কাজের প্রতি মনোযোগী হতে হবে এবং সাধারণ জ্ঞান দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করবেন।’
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘মাঠ থেকে যদি ভালো সুনাম হয় তাহলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। মাঠে এখনও আমার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না। আমি আশা করব আপনারা আরও ভালো কাজ করবেন এবং আপনাদের নতুন নতুন কোনো আইডিয়া থাকলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন।’
সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘অনেক সময় দাড়ি, কমা ছোটখাট জিনিসগুলোর জন্যে দেখা যাচ্ছে লেফট- রাইট করা হচ্ছে। ওটা আমরা চাই না। আপনাদের কমনসেন্স সেখানে ব্যবহার করবেন। যদি কনফিউশন থাকে তাহলে আপনার সহকর্মী আছে, ইউএনও আছে। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবেন এবং বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করবেন।’
প্রায় সাড়ে তিন কোটি খতিয়ান অনলাইনে দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা এগুলো আরও দেখবেন। সব কথার শেষ কথা হচ্ছে, জনগণের সেবা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’
অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী পদে নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। এ ছাড়া জনস্বার্থে এসি ল্যান্ড ও কানুনগোর মাঝে কোনো পদ সৃষ্টি করা যায় কিনা-তাও যাচাই করা হবে।’
উপস্থিত এসি ল্যান্ডদের মধ্যে থেকে পাঁচজনকে গাড়ির চাবি হস্তান্তর করে কেবিন পিকআপ হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী।
আগেও কয়েকটি উপজেলা ভূমি অফিসে গাড়ি দেয়া হয়েছিল। এবার মোট ৬০টি উপজেলা ভূমি অফিসের জন্য গাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলা ভূমি অফিসে একটি করে কেবিন পিকআপ দেয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন শাখার যুগ্ম সচিব প্রদীপ কুমার দাস, উপসচিব কামরুল ইসলাম চৌধুরী, কেবিন-পিকআপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক একেএম আনোয়ার মোর্শেদ ও উপ-প্রধান প্রকৌশলী নবারুণ সরকার।
এমইউএইচ/এনডিএস/জেআইএম