‘ফেরেশতা নেমে আসলেও আইন প্রয়োগ সম্ভব নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:৪৮ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০১৯

শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষই যদি আইন না মানে তাহলে পুলিশ কেন, ফেরেশতা নেমে আসলেও আইন প্রয়োগ সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ আয়োজিত ‘ঢাকা মহানগরীর বাস ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

বেশিরভাগ মানুষ অপরাধ করলে পুলিশ দিয়ে আইন প্রয়োগ অসম্ভব মন্তব্য করে তিনি বলেন, চালকরা মোবাইলে কথা বলার সময় গাড়ি চালবেন। পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে গাড়ির সামনে লাফ দিয়ে রাস্তা পারা হবেন। তাই আমাদের সবার মধ্যেই আইন মানার সংস্কৃতি চালু করতে হবে।

বাস মালিক ও শ্রমিকদের নিয়ে আয়োজিত এ সভায় ডিএমপি কমিশনার বলেন, ডিএমপি কমিশনার হিসেবে আমি গত পৌনে পাঁচ বছরে বাস মালিক শ্রমিকদের সঙ্গে বার বার বসেছি। বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করে সেগুলো থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজেছি। কিন্তু এর সঙ্গে বাস মালিক শ্রমিক এবং পুলিশের বাইরেও সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসাসহ অনেকগুলো সংস্থা জড়িত। সেসব সংস্থার সমন্বয়ের অভাবে আমরা কাঙিক্ষত ফল পাইনি।

সড়কের ভৌত অবকাঠামের উন্নয়ন হলে অনেক পরিবর্তন আসবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক খুবই দুর্ঘটনাপ্রবণ ছিল। রোড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে একটি বাঁক সোজা করে দেয়া হয়েছে। ফলে ওই সড়কে ৯৫ ভাগ দুর্ঘটনা কমে গেছে।

মহানগরীর ওপর দিয়ে দূরপাল্লার গাড়ি যাতায়াত করে। কয়েকটা বাইপাস হওয়ায় কিছুটা কমেছে। ঢাকার বাস টার্মিনালগুলো বাস ডিপোতে পরিণত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী বাস ডিপো নগরীর বাইরে থাকার কথা।

সড়কে ‘বাস বে’ নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বাস বে না থাকায় গাড়িগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়েই যাত্রী ওঠানামা করছে। এ ক্ষেত্রে হাজারো জরিমানা করে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ ১৬৭টা বাসস্ট্যান্ড চিহ্নিত করেছে। ফুটপাত দিয়ে যেন মোটরসাইকেল চলাচল করতে না পারে সেজন্য মেটাল পিলার স্থাপন করেছে। অথচ এগুলো ডিএমপির কাজ না হওয়া সত্ত্বেও ডিএমপি নিজ অর্থায়নে করেছে।

পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে এখনো হাত উঁচিয়ে গাড়ি চলাচলে সিগন্যাল দেয়া হয়। আমরা এখনো এই সিগন্যাল ব্যবস্থাটাকে ডিজিটাল করতে পারলাম না।

কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ফুটেজ দেখে যদি পথচারীর গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে চালকের পাশাপাশি সেই দায় পথচারীকেও নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিভিন্ন অপরাধে গাড়ি চালকদের আমরা প্রচুর পরিমাণে জরিমানা করছি। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ যেন রাজস্ব আদায়ের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এটি ঠিক নয়। গাড়ির মালিক শ্রমিকদের মনে রাখতে হবে এটা শুধু ব্যবসা নয়, সেবা। যত্রতত্র গাড়ি না থামানো, গাড়ির দরজা বন্ধ রাখা, বিনা কারণে হর্ন না বাজানো, শুধু আন্তরিক হলেই এসব মেনে চলা যায়। আমরা সহযোগিত করব কিন্তু মূল উদ্যোগটা মালিক শ্রমিকদেরই নিতে হবে।

একটা দুর্ঘটনা হয় আর একটা আন্দোলন হয়। সড়ক নিরাপদ না করা গেলে জনগণের এ ক্ষোভ দমানো সম্ভব নয়। এ রোষানল থেকে কেউই রেহাই পাবে না।

এআর/এএইচ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।