ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশের উপস্থিতিতে মেডিকেলের প্রশ্নপত্র বণ্টন
সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার সর্বাত্মক প্রস্তুুতি সম্পন্ন করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের মেডিকেল কলেজের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কাছে সিলগালা প্রশ্নপত্র বন্টন করা হয়।
দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ২৩টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ২০টিতে প্রশ্নপত্র হস্তান্তর করা হয়। তবে বিকেলের মধ্যে ঢাকার বাইরের সব ক’টি মেডিকেল কলেজ প্রশ্নপত্র বুঝে নেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা ডেন্টাল কলেজের প্রতিনিধিরা প্রশ্নপত্র বুঝে নেয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল থেকেই প্রশ্নপত্রের সঠিক হিসাব মেলাতে সকাল থেকেই ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটান।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল হান্নান জাগো নিউজকে জানান, আজ দুপুর দেড়টায় জাগো নিউজকে জানান, আগামীকাল শুক্রবার পূর্ব নির্ধারিত সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশের ২৩টি মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠুভাবে ও সুন্দরভাবে পরীক্ষার গ্রহণের সর্বাত্মক প্রস্তুুতি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি জানান, আজ সকাল থেকেই তালাবদ্ধ ট্রাঙ্ক থেকে প্রশ্নপত্র বের করে প্রতিটি মেডিকেল কলেজ থেকে প্রিন্সিপাল কিংবা তার প্রতিনিধির কাছে কেন্দ্রের মোট পরীক্ষার সংখ্যা হিসাব করে সিলগালা প্রশ্ন বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে।
প্রতিটি মেডিকেল কলেজের পক্ষে একজন ম্যাজিস্ট্রেট ও তিনজন পুলিশ সদস্য উপস্থিত থাকছেন। ঢাকার বাইরের মেডিকেল কলেজের প্রতিনিধিরা পুলিশি প্রহরায় প্রশ্নপত্র নিয়ে গিয়ে ট্রেজারিতে জমা রাখবেন। পরীক্ষার দিন সকালে তারা কেন্দ্রে প্রশ্ন নিয়ে যাবেন।
রাজধানীর মেডিকেল কলেজগুলো পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হিসাব করে বুঝে নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরেই প্রশ্ন তালাবদ্ধ করে যাবেন। সকালে এসে প্রশ্নপত্র পরীক্ষার হলে নিয়ে যাবেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলেন, মাত্র দু’দিন আগে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব উঠলেও সকল জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত আগামীকাল (শুক্রবার) ভর্তি পরীক্ষায় রেকর্ড সংখ্যক মোট ৮৪ হাজার ৭৮৪ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছেন।
সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নবিদ্যায় ২৫, জীববিদ্যা ৩০, ইংরেজিতে ১৫ ও সাধারণ জ্ঞানে ১০ নম্বর থাকবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মোট ৮৪ হাজার ৭৮৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭টি সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের প্রত্যেকেটিতে ৬ হাজারটি করে আবেদন জমা পড়েছে। এগুলো হলো- ঢাকা, স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড, শহীদ সোহরোওয়ার্দী, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী মেডিকেল ও ঢাকা ডেন্টাল কলেজ মিরপুর।
এছাড়া অন্যান্য সরকারি মেডিকেল কলেজের মধ্যে সিলেটে ৫ হাজার ২০৭, বরিশালে ৩ হাজার ৫৪, রংপুরে ৫ হাজার ৬৬৮, কুমিল্লায় ৫ হাজার, খুলনায় ৩ হাজার ৬৩২, বগুড়ায় ৪ হাজার ১৫৯, ফরিদপুরে ১ হাজার ৫৪৩, দিনাজপুরে ১ হাজার ৫০৫, পাবনায় ১ হাজার ৯৭৪, নোয়াখালীতে ২ হাজার ৭৮৩, কক্সবাজারে ১ হাজার ৭৩০, যশোরে ১ হাজার ৯৪৫, সাতক্ষীরায় ২৮১, কিশোরগঞ্জে ২ হাজার ৬৯৯, কুষ্টিয়ায় ১ হাজার ২৪৭ ও গোপালগঞ্জে ৩৫৫টি আবেদন জমা পড়েছে।
জানা গেছে, রাজধানীতে নতুন অনুমোদনপ্রাপ্ত মুগদা মেডিকেল কলেজের ৫০টি আসনসহ মোট ২৪টি সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের মোট আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৭৪৪টি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল হান্নান জাগো নিউজকে জানান, স্বচ্ছ প্রক্রিয়া ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে এই প্রথম বারের মতো স্বাস্থ্য অধিদফতরে ভর্তি পরীক্ষার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগের টেলিফোন নম্বরগুলো হলো : ৮৮১৮৭৩৬, ৮৮১৯৩৫৩, ৮৮২৫৪০০ মুঠোফোন : ০১৫৫৫৫৫৫১৬৭ ও ফাক্স ৯৮৮৬৬১২।
এমইউ/এসএইচএস/পিআর