এ অঞ্চলের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ আমার পকেটে প্রবেশ করবে না

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৬:২৫ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০১৯

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘পিরোজপুর, নাজিরপুর ও স্বরূপকাঠীতে আমাকে কোনো ঘুষ-দুর্নীতি স্পর্শ করতে পারবে না। কোনো কাজের বিনিময়ে এ অঞ্চলের মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ আমার পকেটে প্রবেশ করবে না, এটা আমার অঙ্গীকার। আমি আপনাদের কাছে আরও অঙ্গীকার করছি, আমি কোনো সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, মাদক ব্যবসায়ী, ইভটিজারকে প্রশ্রয় দিতে চাই না। আমরা হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলে শান্তির সহাবস্থানে থাকতে চাই। কোনোভাবে যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট না হয়।

স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে

শুক্রবার পিরোজপুরের স্বরূপকাঠীতে এক শোক সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি। এ সভার আয়োজন করে স্বরূপকাঠী উপজেলা আওয়ামী লীগ।

পিরোজপুরে উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের অনুমোদন পেয়েছি। আমাদের কোনো উন্নয়ন কাজ যেন বন্ধ না থাকে, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। স্বরূপকাঠীর বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদের আওতায় ব্রিজ, কালভার্ট, রাস্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সামাজিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়নকে আমরা মেগা প্রকল্পের ভেতরে অন্তর্ভুক্ত করেছি। এটা শেখ হাসিনার নির্দেশ।

স্বরূপকাঠী উপজেলা আওয়া মীলীগের সভাপতি মো. আব্দুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন। শোক সভা শেষে মোনাজাত করা হয়।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ১৯৭১, ১৯৭৫ ও ২০০৪ সালের খুনিরা একই শ্রেণির। তাদের লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে ধ্বংস করা। এই খুনিরা যাতে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। প্রতিক্রিয়াশীলরা যেন বাংলাদেশে ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, সম্ভ্রম হারানো দুই লাখ মা-বোনের আর্তনাদকে বিদ্রুপ করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে হত্যার জন্য, ৩০ লাখ শহীদের স্বপ্ন ধ্বংস করার জন্য, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোকে বিদ্রূপ করার জন্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার জন্য দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্র জড়িত ছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ‘জয় বাংলা’ স্লোগান হয়ে যায় ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’। ‘বাংলাদেশ বেতার’ হয়ে যায় রেডিও পাকিস্তানের আদলে ‘রেডিও বাংলাদেশ’ এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের নির্বিচারে নির্যাতন করা হয়। ক্যান্টনমেন্টে মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যা করা হয়। পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আজমকে পাকিস্তানের পাসপোর্টসহ বাংলাদেশে আসতে দেয়া হয়। স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতিতে নিয়ে আসা হয়।

‘জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে ১৯৭৯ সালের ৬ এপ্রিল ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্সকে আইনে পরিণত করে ১৫ আগস্টের খুনিদের বিচারের পথ বন্ধ করে দেন। খুনিদের বিচার না করে বিদেশি মিশনে প্রতিষ্ঠিত করেন। এরশাদ বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেন। খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পার্লামেন্টে নিয়ে আসেন। বাংলাদেশের তিনটি অগণতান্ত্রিক সরকারই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুনর্বাসন ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করে। অপরদিকে বঙ্গবন্ধুর রক্তের ও আদর্শের উত্তরসূরি শেখ হাসিনা ৩০ লাখ শহীদের কথা মাথায় রেখে সব দেশি-বিদেশি চাপ উপেক্ষা করে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে রায় কার্যকর করেছেন’,- বলেন মন্ত্রী।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করেছেন। ১৪ বছর কারাগারে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন শেখ হাসিনা। সব ধর্মের মানুষের জন্য শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয়ভাবে, সাংববিধানিকভাবে সমান সুযোগ নিশ্চিত করে চলেছেন।

এমইউ/জেডএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।