নিত্য ময়লা-আবর্জনা গায়ে মাখাই যাদের পেশা

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:৫২ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০১৯

‘ওই খালেক, নিচে নাইমা দেখতো, ড্রেন পরিষ্কার অইছে কি না।’ ওস্তাদের নির্দেশ পাওয়া মাত্র ষাটোর্ধ্ব আবদুল খালেক নেমে পড়েন ময়লার ড্রেনে। দুই ফুট উচ্চতার ড্রেনে প্রশিক্ষিত গেরিলা ফাইটারের মতো ঢুকে পড়লেন। পনের বিশ ফুট অতিক্রম করে ড্রেনের আরেক মাথায় গিয়ে হাত উচিয়ে বলে উঠলেন, ‘ওস্তাদ, লাইন ক্লিয়ার’। ড্রেন থেকে উঠে আসা খালেকের হাত-পা আলকাতরার মতো কালো ময়লায় ভরা। ড্রেন থেকে উঠে এসে গেঞ্জিতে হাত মুছে বিড়িতে সুখটান দেন খালেক।

khalek-2

শুক্রবার ছুটির দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নীলক্ষেত থেকে কাঁটাবন যাওয়ার মাঝপথে এ কথোপকথনের দৃশ্য চোখে পড়ে। শুধু খালেক একা নন, তার মতো আরও ডজনখানেক লোককে ড্রেন থেকে ময়লা তোলা ও রাস্তার পাশে ফেলতে দেখা গেল।

এ সময় ময়লার উৎকট গন্ধে পথচারী, রাস্তায় রিকশা, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের লোকজনকে রুমালে মুখ চেপে পথ চলতে দেখা যায়।

khalek-2

খালেক বা তার সহকর্মীরা আর দশটা পেশার চেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী পেশার সঙ্গে জড়িত। নিত্যদিন ময়লা আবর্জনা গায়ে মাখাই তাদের পেশা। খালেকরা প্রতিদিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের আন্ডার ড্রেনের ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন।

khalek-2

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে খালেক জানান, গত ১৪-১৫ বছর যাবত তিনি এ পেশার সঙ্গে জড়িত। শুরুর দিনগুলোয় ড্রেনে নেমে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে সারা শরীর ঘিনঘিন করতো। কিন্তু কয়েক মাস না যেতেই কাজটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।

khalek-2

পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাদের ওস্তাদ শাজাহান। এক সময় নিজেও ড্রেনে নেমে ময়লা-আবর্জনা তোলার কাজ করতেন। বছর বিশেক পর এখন নিজে কাজ ছেড়ে দিলেও লোকজন দিয়ে কাজ করান।

khalek-2

তিনি জানান, প্রতিদিন এক হাজার টাকা মজুরিতে তিনি শ্রমিকদের দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করান।

khalek-2

শাজাহান বলছিলেন, এ পেশার সঙ্গে জড়িতদের মানুষ ভালো চোখে দেখে না। অথচ শহরের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে, পরিবেশ ভালো রাখায় গুরত্বপূর্ণ অবদান রাখি আমরা।

এমইউ/জেডএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।

আরও পড়ুন