ডাক্তার-শিক্ষক অতঃপর প্রশ্ন ব্যবসায়ী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৭:০৩ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

পৃথিবীতে অন্যতম সর্বোৎকৃষ্ট দুটি পেশা শিক্ষকতা আর ডাক্তারি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, পেশা দুটি এখন ‘বাণিজ্য কেন্দ্রিক’। তবে বাণিজ্যের পাশাপাশি এই পেশাকে কেন্দ্র করে চলছে প্রতারণা। এর এক অনন্য উদাহরণ ডা. জেড এম এ সালেহীন (শোভন)।

অবশেষে ডাক্তারি পেশার আড়ালে প্রতারক ডা. শোভনের আসল রূপ উন্মোচন করলো র‌্যাব। মঙ্গলবার মেডিকেল ভর্তির প্রশ্নপত্রসহ আটকের পর সাংবাদিকদের সামনে আনা হয় তাকে। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জানান কিভাবে প্রশ্ন সংগ্রহ আর শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিতেন তিনি।

ডা. শোভন ঢাকার ৫৯২ নম্বর উত্তর শাহজাহানপুরের একটি বাড়িতে থাকতেন। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানায়। ২০০৬ সালে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে ডাক্তারি পেশায় নোয়াখালীতে নিয়োজিত ছিলেন তিনি।

ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কোচিং করাতেন তিনি, টিউশনিও করতেন আর পরীক্ষার পূর্বমুহূর্তে শিক্ষার্থীদের কাছে প্রশ্নপত্র বিক্রি করতেন।

বুধবার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের ৪জনকে আটক করার পর র‌্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ডা. শোভন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকে অবৈধ উপায়ে ভর্তিতে আগ্রহী পরীক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করতেন। এরপর তাদেরকে প্রশ্নপত্র দেয়া কথা বলে আলাদাভাবে কোচিং করাতেন তিনি।এজন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছ থেকে নগদ ১২ লাখ টাকা অথবা চেক নিতেন তিনি।

ডা. শোভনকে আটকের সময় অবশ্য তার কাছ থেকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মডেল প্রশ্নপত্র (৮৮ কপি), উত্তরপত্র, ১ কোটি ২১ লাখ ৩৮ হাজার টাকা সমমূল্যের ১৩ টি চেক এবং নগদ ৩৮ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।

Shovon

র‌্যাব জানায়, জসিম উদ্দিন ও ডা. শোভনের কাজ ছিল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করা। এরপর এদের দুজনের নেতৃত্বে চুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্র দেয়া হতো।

প্রশ্ন সরবরাহের জন্য ড. শোভন ও জসিম উদ্দিন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের কাছ থেকে ব্যাংকের অগ্রিম চেক নিতেন। চেকে উল্লেখিত সমপরিমাণ অর্থ নগদ প্রদান করে ব্যাংকের চেকটি ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকারনামা লিখে নিতেন তারা।

এছাড়া মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর অভিভাবকরা চুক্তি মোতাবেক টাকা পরিশোধে টালবাহানা করতে পারে, সেই আশঙ্কায় তারা পরীক্ষার্থীর মূল সনদপত্রগুলো তাদের জিম্মায় জমা রাখতেন। যাতে পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে পারলে নগদ টাকা দিতে বাধ্য থাকে।

ডা. শোভন ও জসিম উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে এসব প্রশ্নপত্র কার কাছ থেকে সংগ্রহ করতেন জানতে চাইলে মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘তদন্ত চলছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত বলা যাবে।’

# মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস : ডাক্তারসহ আটক ৪
# প্রশ্নপত্র তো সেফটি ট্র্যাঙ্কে তালা মারা, পাবে কোথায়?

এআর/এসকেডি/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।