মলমূত্রের ব্যাকটেরিয়া ঘুরছে টাকায় কয়েনে
ই-কোলাই জাতীয় ব্যাকটেরিয়া মানুষের মলে পাওয়া যায়। আবার এই ব্যাকটেরিয়াই ক্ষতিকর মাত্রায় টাকা ও কয়েনে পাওয়া গেছে।
টাকা ও কয়েন নিয়ে প্রায় ছয়মাস ধরে গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্রী নিশাত তাসনিম। বিবিসি বাংলায় এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
নিশাত তাসনিম জানিয়েছেন, এক হাজার মাত্রা পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াকে সহনশীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য মনে করা হলেও ১২টি উৎস (খুলনা শহরের বিভিন্ন পর্যায়ের দোকান ও বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছ থেকে) থেকে নেয়া কাগজের টাকার নোট ও কয়েনের আরও অনেক বেশি মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন তারা।
নিশাত তাসনিম বলছেন, ‘সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া পেয়েছি মাছ, মাংস আর মুরগির দোকান থেকে সংগ্রহ করা টাকার নোট আর কয়েনে।’
নিশাত তাসনিমের এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুণ চৌধুরী। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, এ পরীক্ষায় আমরা যা পেয়েছি তা জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে ভয়াবহ। কারণ সাধারণ ব্যাকটেরিয়া তো আছেই, সাথে পাওয়া গেছে মানুষের মল মূত্র থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক। টাকা আমরা যেভাবে ব্যবহার করছি আবার ঠিকমতো হাত না ধুয়েই খাবার খাচ্ছি। রাস্তায় সব এক হাতেই হচ্ছে।
মলমূত্রের ব্যাকটেরিয়া টাকায় কীভাবে আসছে- এমন প্রশ্নের জবাবে হারুণ চৌধুরী বলছেন, কিছু ব্যাকটেরিয়া এমনিতেই হয়। আবার কিছু ব্যাকটেরিয়া মল মূত্রের সাথে থাকে। যেমন ধরুন সুইপার হিসেবে যারা কাজ করেন তারা সরাসরি মলমূত্র নিয়ে কাজ করেন। তাদের কাছেও প্রতিনিয়ত অনেক টাকা বা কয়েন হাতবদল হয়। আবার বাজারে টাকা মাটিতে পড়ে। মূলত এভাবে মলমূত্রের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া চলে আসে নোট বা কয়েনে।
এ থেকে নিরাপদ থাকতে হলে হাত ধোয়ার ওপরই গুরুত্ব দিতে হবে। হারুণ চৌধুরী বলছেন, অনেকেরই ওয়াশরুম থেকে আসার পর ঠিকমতো হাত ধোয়ার অভ্যাস নেই। তারাই আবার টাকা ধরছেন এবং সেই টাকা তাদের কাছ থেকে অন্যদের কাছে যাচ্ছে। এভাবেই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ছড়াচ্ছে। তাই ঝুঁকি মুক্ত থাকতে চাইলে সচেতনতার বিকল্প নেই।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।
এনএফ/পিআর