ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৩৯ এএম, ১২ আগস্ট ২০১৯

ঈদুজ্জোহার চাঁদ হাসে ঐ/ এল আবার দুসরা ঈদ!/ কোরবানি দে, কোরবানি দে,/ শোন খোদার ফরমান তাগিদ...’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই কাব্যসুর আকাশ-বাতাস মন্দ্রিত করে মনপ্রাণ ভরে তুলছে ঈদের আনন্দ রোশনাইয়ে। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা আজ সোমবার।

বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং যথাযথ ধর্মীয় মর্যদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে সারা দেশে মুসলিম সম্প্রদায় ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। সকালে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের পর মহান আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের জন্য পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে দেশের মুসলমানরা উদযাপন করবে দিনটি।

প্রতিবছর পবিত্র জিলহজ মাসের ১০ তারিখ মুসলমানদের এই আনন্দের দিনটি উদযাপিত হয়। তবে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পবিত্র এই মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যেকোনো দিন পশু কোরবানি দেয়া যায়। সে হিসেবে আগামী মঙ্গলবার ও বুধবার পশু কোরবানি করবে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে তার বাণীতে কোরবানির মর্ম অনুধাবন করার আহ্বান জানান। বাণীতে তিনি বলেন, ‘ত্যাগের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত হলেই প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি ও সৌহার্দ্য। মহান আল্লাহর কাছে কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য শুদ্ধ নিয়ত ও উপার্জন থাকা আবশ্যক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর উত্তরোত্তর উন্নতি, সমৃদ্ধি এবং শান্তি কামনা করেছেন। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন, আমরা সকলে পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’

এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আলোকসজ্জা করা হবে। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানায় পরিবেশন করা হবে বিশেষ খাবার।

সোমবার সকাল ৮টায় জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল অর্থাৎ বৃষ্টি বেশি থাকলে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে।

প্রধান জামাতসহ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ৫৮২টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৩১২টি ও উত্তর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ২৭০টি ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে।

দুই সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডের মসজিদ, মাঠ ও ঈদগাহে চার বা পাঁচটি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৫৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে পাঁচটি করে ঈদ জামাতের আয়োজন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ২৭০টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জাতীয় ঈদগাহের প্রধান ঈদের জামাতসহ ডিএসসিসি এলাকায় মোট ৩১২টি স্থানে ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বরাবরের মতো এবারও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বড় শহর থেকে অগণিত মানুষ নাড়ির টানে গেছেন গ্রামের বাড়িতে।

ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নির্ধারিত স্থানগুলোতে পশু কোরবানির জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরবানি পশুর বর্জ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া নিয়েছে উভয় সিটি কর্পোরেশন। দুই সিটি কর্পোরেশনের ১৪ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছে তারা।

এইচএস/এআর/এসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।