ক্রেতারা ছুটছেন দা-বটির দোকানে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ১১ আগস্ট ২০১৯

আগামীকাল সোমবার পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির এ ঈদে পশু জবাই করা, চামড়া ছাড়ানো ও মাংস কাটার জন্য প্রয়োজন ছুরি-চাকু, চাপাতি, বটি, দাসহ লোহার বিভিন্ন উপকরণ। তাই পশুর হাটগুলোর পাশাপাশি এখন কোরবানির পশুর মাংস কাটার সরঞ্জামাদি কিনতে ভিড় করছে। এতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামাররা। যেন দম ফেলারও সময় পাচ্ছেন না তারা, ব্যস্ত লোহার তৈরি ধারালো অস্ত্র মেরামতেও। এছাড়া বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় অস্থায়ী দোকানে জমে উঠেছে বিকিকিনি।

রাজধানীর খিলগাঁও, কারওয়ান বাজার, মুগদা, মান্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোর সামনে সাজানো ছুরি-চাপাতি, দা-বটি। ক্রেতারা আসছেন। কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পছন্দসই কোরবানির পশুর মাংস কাটার সরঞ্জাম। শুধু যে নতুন দা-বটি কেনার জন্যই লোকজন কামারের দোকানে আসেন তা নয়, জং ধরা পুরোনো দা-বটি শাণ দিতেও আসছে অনেকে।

মুগদার ৭২ নম্বর এলাকায় কামারের দোকানগুলোতে গত কয়েকদিন ধরে টুংটাং শব্দে মুখর। ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। ছুরি-চাপাতি, দা-বটি সাজিয়ে রেখেছেন দোকানের সামনে।

da-boti2

ঈদের বেচাকেনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মুকাদ্দেছ আলী জাগো নিউজকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অর্ডার বেড়েছে। দিনরাত কাজ করছি। সারা বছরই দা-বটি সাপল ও কোদাল তৈরি করি। কিন্তু কোরবানির ঈদে ছুরি-চাকু, চাপাতি চাহিদা বেশি। নতুন বিক্রির পাশাপাশি পুরোনো ছুরি-চাকু শাণ দিচ্ছি। স্প্রিং ও জাহাজের লোহা দিয়ে এসব জিনিসপত্র বানানো। তবে স্প্রিংয়ের দা ও চাপাতির দাম বেশি। এক কেজি ওজনের চাপাতি বিক্রি করছি ৭০০ টাকা, স্প্রিংয়ের চাপাতি দু-তিনশ বেশি নিচ্ছি। ছুরি ৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়, গরু জবাইয়ের বড় ছুরি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা এবং বটি আকারভেদে ১০০ থেকে ১০০০ টাকা। এছাড়া চাপাতি শাণ দিতে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ছুরি ও বটি শাণ ৩০ থেকে ১০০ টাকা।

তিনি বলেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে। উপকরণ লোহা, ইস্পাত ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় দাম একটু বেশি নিতে হচ্ছে। চায়না স্টিলের ছুরি-চাকুর কারণে আমাদের এখন ব্যবসা কমে গেছে। ছোট থেকে কামারের দোকানে থেকে এ কাজ শিখেছি। অন্য কাজ জানি না তাই সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে দোকান চালাচ্ছি। ভাড়া কর্মচারীর বেতন দিয়ে কোনোরকম সংসার চলে। প্রতিবছর কোরবানির ঈদে ব্যবসা ভালো হয়। এটি দিয়ে চলতে হয়।

da-boti2

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কর্মকারের দোকান ঘুরে দেখা যায়, বড় আকারের ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকায়। চাপাতি প্রতিটি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা। পশু জবাইয়ের পর চামড়া ও চর্বি ছাড়ানোর জন্য বিশেষভাবে তৈরি যন্ত্র বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩০ থেকে ১২০ টাকায়। চাকু বিক্রি হচ্ছে সাইজ অনুযায়ী ১৫০-১২০ টাকায়, ভালো বটি বিক্রি হচ্ছে ৭০০-১০০০, আর একটু নরমাল বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। চাইনিজ কুড়াল নিজেদের তৈরি ৭০০-৮০০টাকা, আর চায়না থেকে আমদানি করা ৯০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শুধু কামাররা নয় বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ছুরি-চাকু বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। দোকানের সামনে ও ভ্যানে করে বিক্রি করছেন কোরবানির বিভিন্ন ধরনের উপকরণ। খিলগাঁয়ের দা-বটি, ছুরি-চাকুর মৌসুমি ব্যবসায়ী হাবিব।

তিনি বলেন, আগে ফলের ব্যবসা করতাম। গত দুদিন ধরে খাটিয়া চাটাই ও ছুরি-চাকু বিক্রি করছে। বিক্রি হচ্ছে। ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত বিক্রি করব। গত বছরও এ ব্যবসা করেছি ভালোই লাভ হয়েছে।

এসআই/বিএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।