ক্রেতা গেল কই?
‘বেপারি ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি-প্লাস্টিকের পর্দাগুলো খুলে দিন। আকাশ পরিষ্কার আছে। ভেজা মাঠ ও রাস্তাঘাট শুকাইয়া যাইব। জুম্মার নামাজ শেষ হইছে। কিছুক্ষণ পর কাস্টমার আসতে শুরু করব ইনশাল্লাহ।’
আজ শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুর ২টায় রাজধানীর রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠ থেকে মাইকে এ কথাগুলো ভেসে আসছিল। আকাশ পরিষ্কার থাকায় গরুর বেপারিদের কেউ গরুকে গোসল করাচ্ছিল, কেউবা শুকনো গামছা দিয়ে শরীর মুছে দি্চ্ছিল, আবার কেউবা ব্রাশ দিয়ে লোম আঁচড়ে দিচ্ছিল। বেপারিরা গরু নিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত থাকলেও যাদের জন্য আয়োজন সেই ক্রেতার উপস্থিতি ছিল খুবই কম।
জুমার নামাজের পরপরই ক্রেতার ঢল নামবে মনে করলেও বিকেল ৩টা পর্যন্ত হাতেগোনা কিছুসংখ্যক ক্রেতার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বেপারিরা মোবাইল ফোনে রাজধানীর অন্যান্য গরুর হাটে খবর নিচ্ছিলেন যে, ক্রেতার উপস্থিতি আছে কি নেই। তবে সব বেপারির মুখে একই প্রশ্ন শোনা গেল। আর তা হলো-ক্রেতারা গেল কই?
সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, রহমতগঞ্জ ক্লাব মাঠের ভেতর ও বাইরে বেশ কয়েকটি হাসিল (খাজনা) আদায়ের ঘরে তরুণরা বসে আড্ডা দিচ্ছেন। অনেকক্ষণ পরপর একটি, দুটি গরু বিক্রি হলে বিক্রেতারা হাসিল দিতে আসছিলেন। অনেকেই ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে গরু কিনতে এসে ঘুরে ঘুরে গরু দেখাতে দেখা যায়।
গরুর বেপারিরা বললেন, গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত থেকে টুকটাক বেচাকেনা হচ্ছে। তবে ঈদের বেচাকেনা যেভাবে হয় সেইভাবে ক্রেতার ভিড় নেই। বৃষ্টি-বাদলের কারণে ক্রেতা সমাগম কম। তবে বেচাকেনা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা কাজ করছেন না।
জামালপুরের গরুর বেপারি নুরু মিয়া বলেন, এখন গরু বেশি ক্রেতা কম। কিন্তু ক্রেতার ঢল নামলে দুই ঘণ্টা পর গরুর রশিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাজার ভালো হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
রশীদ আলী নামে সিরাজগঞ্জ থেকে আসা আরেক বেপারি বলেন, এ বছর ভারতীয় গরুর আমদানি কম হওয়ায় দেশী গরুই ভরসা। গেরস্থরা এবার বেপারিদের কাছে বেশি দামে গরু বিক্রি করেছে। তাই বেশি দামে কেনায় বেপারিরা এখন হাটে গরু দাম বাড়িয়ে বিক্রি করবেন। কিন্তু গত দুই দিনে কেনা দামের চেয়েও ক্রেতারা গরুর দাম কম বলেছেন। এজন্য গরু বিক্রি না করে ক্রেতা সমাগমের অপেক্ষায় রয়েছেন এই ব্যাপারি।
এমইউ/এসআর/পিআর