সদরঘাটসহ পাঁচ স্থানে দুদকের অভিযান

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৭:৫৪ পিএম, ০৮ আগস্ট ২০১৯

ঈদুল আজহায় লঞ্চের টিকিটে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) অভিযানকালে এমভি পারাবত, এমভি ফারহানসহ ১৫টি লঞ্চের সার্বিক ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনা এবং যাত্রীদের সাথে কথা বলেন দুদক কর্মকর্তারা।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিম জানতে পারে, অধিকাংশ লঞ্চে টিকিট বিক্রি করা হলেও যাত্রীদের নাম ও ফোন নম্বর সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয় না। পরে টিমের পক্ষ থেকে যাত্রীদের তথ্যাদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার জন্য লঞ্চের টিকিট বিক্রয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এ সময় প্রতিটি লঞ্চে লাইফ জ্যাকেট/লাইফ বয়া প্রয়োজনীয় পরিমাণে রয়েছে কি না এমন প্রশ্নে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।

বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটর করার জন্য উপস্থিত বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাকে তাগাদা দেয়া হয়। এছাড়া লঞ্চের ভেতরে জরুরি প্রয়োজনে সাহায্যের জন্য কন্ট্রোল রুমের হটলাইন নম্বর দৃশ্যমান না থাকায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।

এছাড়া লঞ্চযাত্রায় নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করা হলে দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে (হটলাইন- ১০৬) অভিযোগ করার জন্য লঞ্চ টার্মিনালে ও লঞ্চের ভেতরে মাইকিং করা হয়।

এদিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান না করে প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠিয়ে হয়রানি করার অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুদক। দুদক অভিযোগ কেন্দ্রে আসা এক অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার এ অভিযান পরিচালিত হয়।

সরেজমিন অভিযানে দুদক টিম দেখে, ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবেশ অত্যন্ত অপরিচ্ছন্ন, যা থেকে সহজেই রোগীদের ইনফেকশন হতে পারে। হাসপাতালে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করলেও তা তদারকিতে কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো নজরদারি নেই।

এছাড়া রোগীদের জন্য বরাদ্দ সরকারি ওষুধ বিনামূল্যে প্রদানের কথা থাকলেও কয়েকজন সেবাপ্রার্থীর সাথে কথা বলে দুদক টিম জানতে পারে, রোগীরা চাহিদামতো ওষুধ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে দুদক টিম ওষুধ রেজিস্টার পরীক্ষা করে দেখে এবং জানতে পারে ওষুধ বিতরণ কার্যক্রম সঠিকভাবে রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে না। পরে এ বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য এবং নানাবিধ অসঙ্গতি দূরীকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবাসিক চিকিৎসককে (আরএমও) দুদক টিম পরামর্শ দেন।

অন্যদিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল চার লেন সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুদক। সমন্বিত জেলা কার্যালয়, টাঙ্গাইল থেকে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সরেজমিন অভিযানে দুদক টিম জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে চলমান নির্মাণকাজে অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পায়।

টিম দেখে, নির্মাণাধীন এ সড়কের বেশকিছু অংশ ভেঙে গেছে। প্রাথমিক বিশ্লেষণে দুর্বল নকশা বা দুর্বল নির্মাণকাজের কারণে এমনটি ঘটেছে মর্মে দুদক টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। পরে এর পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণে অনুসন্ধানের সুপারিশপূর্বক কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে অভিযান পরিচালনাকারী টিম।

এছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে এবং গৃহহারা প্রকল্পের আওতায় গরিব-দুঃখীদের গৃহনির্মাণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে যথাক্রমে সমন্বিত জেলা কার্যালয়, যশোর এবং সমন্বিত জেলা কার্যালয়, রাজশাহী থেকে অভিযান পরিচালনা করে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম।

এমইউ/আরএস/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।