সোহরাওয়ার্দীতে সপ্তাহেও মিলছে না ডেঙ্গু টেস্টের রিপোর্ট

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০১৯

ডেঙ্গু পরীক্ষার উপকরণ বা কিট সংকট নেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তারপরও ডেঙ্গুসহ অন্য পরীক্ষার রিপোর্ট দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগী ও তার স্বজনরা।

মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালটির ডেঙ্গু পরীক্ষার রক্ত সংগ্রহের জন্য বরাদ্দকৃত বুথগুলোর সামনে শতাধিক মানুষের ভিড় দেখা যায়। রিপোর্ট নিতে অপেক্ষা করতে দেখা যায় তার চেয়ে বেশি লোককে। অনেকে রীতিমতো ঝগড়াঝাটিও শুরু করেন সেখানে।

গত ৩০ জুলাই রক্ত পরীক্ষা দিয়ে যান নুরুল ইসলাম নামে ষাটোর্ধ্ব এক রোগী। পরদিন রিপোর্ট দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরপর কয়েকদিন এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও রিপোর্ট পাননি তিনি। অসুস্থ বাবার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং মিস দিয়ে গত তিনদিন ধরে এ রিপোর্ট সংগ্রহ করতে আসছেন ছেলে নুরুন্নবী। প্রায় তিনঘণ্টা অপেক্ষা করেও আজও রিপোর্ট পাননি তিনি। একসময়ে সেখানে হৈ চৈ বাধিয়ে দেনে এই যুবক।

dengu

নুরুন্নবী জাগো নিউজকে বলেন, কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরে কাউন্টারে আসতে পারি। কিন্তু প্রতিদিনই শুনছি কাল রিপোর্ট পাব। তারা নাকি রিপোর্ট খুঁজে পাচ্ছে না।

একই অভিযোগ হাসপাতালের অন্য রোগীদেরও। গত তিনদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি সানজিদা আক্তার শিল্পী। হাসপাতালের বারান্দায় অনেক রোগীর সঙ্গে তারও চিকিৎসা চলছে।

সানজিদার ভাই জাবেদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এখানে যেকোন পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে নানা সমস্যা হচ্ছে। যারা একটু চেনে তারা দ্রুত আনতে পারছেন। বাকিদের তো লাইনে দাঁড়িয়েই চলে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

dengu

রক্তসহ নানা বিষয়ে পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে এই সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন খোদ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে একটি জায়গায় অভিযোগ, রিপোর্ট সময়মত দিতে পারছি না। তবে একটু অপেক্ষা করলে সবাই পাবে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, ‘দিনে প্রায় ১২০০’র মতো লোকের ডেঙ্গুর পরীক্ষা করা হচ্ছে। যার সর্দি কাশি সেও ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে আসছে। আবার আমরা বলছি, গ্রামে যাওয়ার আগে পরীক্ষা করে যান।’

dengu

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্যাথলজিতেও কর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। হাসপাতালে প্রায় ১৫শ রোগী ভর্তি। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা রয়েছে। আবার প্রতিদিন প্রায় ১২শ ডেঙ্গু রোগীর টেস্ট করতে হচ্ছে।

অধ্যাপক উত্তম বলেন, প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে চার হাজার রোগী দেখা হয়। সেখান থেকে যদি দুই হাজার জনকেও পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় তাহলে, এই অল্প জনবলে, ৪/৫ জন টেকনিশিয়ান আর ২-৪টি যন্ত্র দিয়ে কিভাবে সম্ভব?
‘তাছাড়া যন্ত্রেরও তো লিমিটেশন আছে। হ্যাঙ্গওভার হয়ে যাচ্ছে, আউট অব অর্ডার হয়ে যাচ্ছে। এসি নষ্ট হচ্ছে। ফলে রিপোর্ট দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

তবে জনবল যতই কম থাক, আমাদের যাই হোক, ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি নেই বলে উল্লেখ করেন ড. উত্তম কুমার।

জেপি/জেএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।