শরীয়তপুরে খাল ভরাট : পানিবন্দি হাজার পরিবার


প্রকাশিত: ১১:৫৬ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় সরকারি খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে স্বার্থান্বেষী মহল। এতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন উপজেলার প্রায় এক হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে অসংখ্য সংযোগ সড়ক।

পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন মানুষ। পানি নিষ্কাশনের জন্য খালগুলো সচল করা হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

উপজেলা ভূমি অফিস ও স্থানীয়রা জানান, শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদীর সঙ্গে প্রায় শতাধিক সংযোগ খাল রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে খালগুলো ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা। ভারি বর্ষণ ও নদী থেকে আসা জোয়ারের পানি আটকা পড়ে উপজেলার কেদারপুর, ঘরিষার, চরজুজিরা এলাকার প্রায় এক হাজার পরিবার দুই মাস ধরে পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। কেদারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। তলিয়ে গেছে এসব এলাকার সংযোগ সড়কগুলো। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, তেলীপাড়া থেকে ভূমখাড়া হয়ে পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযোগ খালটির ১০টি স্থানে খাল ভরাট করে অনেকেই স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। খালটির ভূমখাড়ায় দুই পাশে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছেন উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মচারী আলী আকবর। গৌরাঙ্গ বাজারের পাশে খাল দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন স্থানীয় সুমন মৃধা। পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযোগ কেদারপুরের খালটির মধ্যকেদারপুরে অন্তত ১৫টি স্থানে বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। মধ্য কেদারপুর গ্রামের শাহাআলম মোল্লা খাল দখল করে পাকা দোকান নির্মাণ করেছেন।

কৃর্তিনশা নদী থেকে নড়িয়া বাজারের পূর্ব পাশ দিয়ে চাকধ পর্যন্ত বয়ে যাওয়া খালটির অনন্তত ৩০টি স্থানে বাঁধ দেয়া হয়েছে। নড়িয়া বাজারের পূর্ব মাথায় খাল ভরাট করেই পাকা সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।

কেদারপুর গ্রামের বাসিন্দা ওসমান ফরাজী (৬০) বলেন, খালগুলো দিয়ে একসময় নৌকা চলাচল করতো। খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় নৌকা চলাতো দূরের কথা পানি নিষ্কাশনের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। ভারি বর্ষণে পানি আটকা পড়ে পুরা গ্রাম তলিয়ে গেছে। এই এলাকার প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছেন।

গৌরঙ্গবাজারের খাল দখলকারী সুমন মৃধা জাগো নিউজকে বলেন, খাল আমাদের জায়গা দিয়ে গেছে। আমাদের দরকার হয়েছে তাই আমি স্থাপনা নির্মাণ করেছে। সরকারের দরকার পড়লে ছেড়ে দেব। আরেক দখলকারি মধ্য কেদারপুর গ্রামের শাহাআলম মোল্যা বলেন, এখানে সরকারি কোনো খাল নাই। এক সময় আমাদের জায়গা দিয়ে পানি নামতো। এখন আমাদের দরকার হয়েছে আমরা ভরাট করেছি।

এ ব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইছমত উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, যারা সরকারি খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি রাস্তার কারণে কোথাও বাঁধার সৃষ্টি হলে তা অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে বলা হবে।

মো. ছগির হোসেন/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।