২ স্কুলছাত্রী হত্যা : ১ মাস পর ধর্ষণ মামলা
মাদারীপুরে চাঞ্চল্যকর দুই স্কুলছাত্রী হ্যাপি ও সুমাইয়া হত্যার ঘটনার এক মাস পর রোববার বিকেলে আদালতে আরেকটি মামলা হয়েছে। এর আগে ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কায় থাকা নিহতের পরিবার থানায় এক মাস ঘুরেও কোনো কুলকিনারা পায়নি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আগের দায়ের করা হত্যা মামলায় পুলিশ প্রধান আসামিকে না ধরায় ক্ষুব্ধ পরিবার, সহপাঠিসহ এলাকাবাসী।
নিহতের পরিবার ও মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৩ আগস্ট মাদারীপুরে চাঞ্চল্যকর দুই স্কুলছাত্রী হত্যার ঘটনায় ১৪ আগস্ট নিহত সুমাইয়ার বাবা বিল্লাল শিকদার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলা সন্তোষজনক না হওয়ায় দীর্ঘ এক মাস থানায় ঘুরে অবশেষে বাধ্য হয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে রানা নার্গাসীকে প্রধান আসামি করে অপহরণ শেষে ধর্ষণের পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
এই মামলায় আসামিরা হলেন, রানা নার্গাসী (২১), মেহেদী হাসান (২০), শিপন শিকদার (২০), রফিকুল ইসলাম দরজী (২০), উজ্জ্বল শিকদার (২৫), রকিব শিকদার (২১), আলামিন হাওলাদার (২০) ও সাজন বেপারী (২০)।
এ আসামিদের মধ্যে রকিব শিকদার, শিপন শিকদার ও রফিকুল ইসলাম দর্জীকে গ্রেফতার করেছে মাদারীপুর মডেল থানা পুলিশ।
নিহত হ্যাপীর মা মুক্তা বেগম বলেন, গত এক মাস ধরে সদর থানায় ঘুরেও কোনো কুলকিনারা পাইনি। পরে বাধ্য হয়ে আদালতের আশ্রয় নিতে হয়েছে। এ ঘটনার শুরু থেকেই থানায় মামলা গ্রহণে পুলিশ নানাভাবে হয়রানি করেছে।
এলাকাবাসী আনোয়ার বেপারী বলেন, এর আগে এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। সাধারণ অসহায় মানুষ যদি পুলিশের কাজ থেকে কোনো সহযোগিতা না পায়, তাহলে পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইয়াদ মোর্শেদ সজল জাগো নিউজকে বলেন, ধর্ষণের ঘটনাকে ধামাচাপা দিতেই এর আগে হত্যা মামলা নিয়েছে পুলিশ। রোববার বিকেলে আদালতে দায়ের করা মামলায় বিজ্ঞ আদালত সদর থানা পুলিেশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ প্রদান করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৩ আগস্ট স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাদারীপুরের মস্তফাপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির দুই স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ শেষে নির্যাতন করে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছেন বখাটেরা। পরে ওই দুই ছাত্রীকে সদর হাসপাতালে ফেলে রেখে বখাটেরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় দায়ের করা আগের হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হলেও প্রধান আসামি রানাসহ অন্যদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এ কে এম নাসিরুল হক/এমজেড/পিআর