ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের সমাধান


প্রকাশিত: ০৩:৫৬ এএম, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫

‘আমার নানা একজন হার্টের পেশেন্ট কিন্তু এখানকার নার্সদের কিছু বললে তারা বাজে ব্যবহার করে। স্পেশালি সাইফুল, এখানকার পিয়ন, কুকুরের মতো ব্যবহার করে।’

‘এখানে সার্ভিস পাওয়ার জন্য প্রতি পদে পদে ঘুষ দিতে হয় যা মোটেই কাম্য নয়।’

উপরের এ দু’টি অভিযোগ সরকারি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ভুক্তভোগী দু’জন রোগী ও তাদের স্বজনদের। অভিযোগগুলোর একটি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ১৪ মিনিট ৩২ সেকেন্ড ও দ্বিতীয়টি শুক্রবার ছুটির দিন সকাল ৯টা ৫৪ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে করা হয়।

Health

জাগো নিউজের পাঠকরা অভিযোগগুলো দেখে মনে মনে নিশ্চয়ই ভাবছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করে কী লাভ! অতীতের মতো অভিযোগ টেবিলেই দিনের পর দিন পড়ে থাকবে।

শুনতে অবিশ্বাস্য হলেও এ দুটি অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নয় ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার আওতায় মোবাইল ফোনে তারবার্তার মাধ্যমে সরাসরি স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সার্ভিস (এমআইএস) করা হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর পরই ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে সমস্যার সমাধান করা হয়ে গেছে। হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তারা সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।  

স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমআইএস শাখার মাধ্যমে বর্তমানে প্রতিদিন মোবাইল ফোনে পাঠানো মেসেজের মাধ্যমে রাজধানীসহ সারাদেশের প্রায় ৮০০ সরকারি হাসপাতালের ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পরামর্শ গ্রহণ ও দ্রুততম সময়ে সমাধান করা হচ্ছে।

Health

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ও পরিচালক (এমআইএস) অধ্যাপক  ডা. আবুল কালাম আজাদ সম্প্রতি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, এমআইএস শাখার কয়েকজন কর্মকর্তা প্রতিদিন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অভিযোগগুলোর বিষয়ে অভিযোগকারীর মোবাইলে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন। তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা চালান।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ ভাল উদ্যোগটির খবর অসংখ্য ভুক্তভোগী ও রোগীর স্বজনরা জানেন না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও পরামর্শ পাঠানোর জন্য সকল সরকারি হাসপাতালের চৌহদ্দিতে ডিসপ্লে বোর্ডে অভিযোগ পরামর্শ পাঠানোর জন্য এমআইএস নির্ধারিত নম্বর লিখে রাখার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা করা হচ্ছে না। ফলে গত ২/৩ বছর যাবত এটি চালু হলেও খুব বেশি অভিযোগ জমা পড়ছে না!

এমআইএস শাখার তথ্যানুসারে ভুক্তভোগীদের প্রাপ্ত অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- শতকরা ৫৯ দশমিক ৮৭ ভাগ দায়িত্বে অবহেলার কথা, দুর্বল ব্যবস্থাপনা ১১ দশমিক ৯০ ভাগ, ব্যবহার ও মনোভাব ৫ দশমিক ০১ ভাগ, দুর্নীতি ও স্বচ্ছতা ৭ দশমিক ৪৯ ভাগ, নিয়মানুবর্তিতা ০ দশমিক ৫১ ভাগ, খাবারের মান ও সেবা ১ দশমিক ২৯ ভাগ, পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ১ দশমিক ৩২ ভাগ, নিরাপত্তা ০ দশমিক ০৮ ভাগ, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ০ দশমিক ৯৪ ভাগ,  অসমতা ০ দশমিক ৪৬ ভাগ ও অন্যান্য অভিযোগ ১১ দশমিক ১২ ভাগ।

Health

প্রাপ্ত তথ্যানুসারে- শতকরা প্রায় ৭১ ভাগ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ নিজেরাই এসব অভিযোগের সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন। শতকরা ১৬ দশমিক ৩৯ ভাগ অভিযোগের সমাধান তাৎক্ষণিকভাবে সম্পন্ন হয়। প্রায় ৫ ভাগ অভিযোগের সমাধানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়।

রোববার সকাল ১১টা ১০মিনিট ৩৮ সেকেন্ডে চাপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনৈক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন ডাক্তারা যে রুমে চিকিৎসা দেন সে রুমের সামনে ফ্যান দেয়া উচিত। তাৎক্ষণিকভাবে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান দেয়া হয়।

এমইউ/এসএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।