যানজট কমাতে এবার মেট্রোরেল করতে চায় চসিক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৯:০৯ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৯

চট্টগ্রাম নগরের প্রায় ভেঙে পড়া সড়ক যোগাযোগে উন্নতির আশা দেখিয়ে গত সাত বছরে একের পর এক ফ্লাইওভার তৈরি হলেও সে সব এখন নগরবাসীর গলার কাঁটা। এ প্রেক্ষপটে এবার নতুন করে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)।

বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। শেষ হয়েছে প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি (প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই)।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সম্মেলন কক্ষে শুক্রবার (২৬ জুলাই) আয়োজিত এক বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালটেন্টস লিমিটেডের অধীনে থাকা বুয়েটের ড. সোহরাব উদ্দিন, ড. এম আজাদুর রহমান, মো. মাহবুবুল আলমসহ ২৫ জনের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন দল। প্রকল্প-সংক্রান্ত তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন ডেপুটি টিম লিডার মাহবুবুর রহমান।

তথ্যচিত্র দেখানো হয়, নগরের কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ২৬ কিলোমিটার, সিটি গেট থেকে শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এবং অক্সিজেন থেকে একে খান বাস স্টপ পর্যন্ত সাড়ে ১৪ কিলোমিটার এমআরটি (মেট্রোরেল) লাইন চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

metro-rail-ctg

সাড়ে ৫৪ কিলোমিটার তিনটি লাইনে ৪৭টি স্টেশনের প্রস্তাব করা হয়েছে। একেকটি স্টেশনের দূরত্ব হবে ৭০০ মিটার থেকে ২ দশমিক ৪ কিলোমিটার। ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার গড় গতিবেগ থাকবে মেট্রোরেলের। ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটির মাধ্যমে ঘণ্টায় দুই প্রান্তে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব। তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নেও বাঁধা হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা একাধিক ফ্লাইওভার।

সূত্র জানায়, রেল লাইন-২ ও রেল লাইন-৩ নির্মাণে অন্য প্রকল্পে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকলেও রেল লাইন-১ নির্মাণে দুটি প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এর একটি বহদ্দার হাট-লালখান বাজার সড়কাংশে ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং দ্বিতীয় প্রতিবন্ধকতা লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর সড়কে চলমান এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ।

বৈঠকে চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরে চ্যালেঞ্জ আছে। বে-টার্মিনাল করার উদ্যোগ নিচ্ছে। এবারের মতো জলাবদ্ধতা ও যানজট জীবনে দেখিনি। তাই এমআরটি লাইন নির্বাচনে গভীরভাবে ভাবতে হবে। এটি স্বপ্নের প্রকল্প, এর বিকল্প নেই। মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের চিন্তা করে, ৫০-১০০ বছর ব্যবহার উপযোগী এমআরটির পরিকল্পনা করতে হবে। চট্টগ্রাম শহরকে বাঁচাতে হলে চসিক-সিডিএর সমন্বয় জরুরি।’

এ প্রকল্প নিয়ে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। ৬০ বর্গ মাইলের এ শহরে প্রতিদিন জনসংখ্যার চাপ বেড়েই চলেছে। সে বর্ধিত জনসংখ্যার চাপ সরাসরি গণপরিবহনের ওপর পড়ছে। সময়ের সাথে সাথে দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থা চট্টগ্রামের সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম দোভাষ, চুয়েট ভিসি রফিকুল আলম, প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া প্রকৌশলী আলী আশরাফ, স্থপতি সোহেল শাকুর, স্থপতি আশিক ইমরান প্রমুখ।

আবু আজাদ/এনডিএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।