ডেঙ্গুতে আরও এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০১:০২ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৯
রাজধানীতে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তানিয়া সুলতানা (২৮) নামে আরও এক নারী চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় ধানমন্ডিতে বেসরকারি আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত তানিয়া সুলতানার স্বামী ব্যবসায়ী আমিনুল বাহার হিমন আজ (শুক্রবার) দুপুর ১২টায় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে জানান, তানিয়া সুলতানা গত ২২ জুলাই থেকে জ্বরে ভুগছিলেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার ডেঙ্গু পজিটিভ আসে। ২৪ জুলাই তাকে রাজধানীর মগবাজারে কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল তাকে আনোয়ার খান মর্ডান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাক্তার আব্দুল কাহার আকন্দের অধীনে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রাত ১০টায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত তানিয়া সুলতানা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৪৭ ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনারারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহতের স্বামী হিমন জানান, জ্বরের কারণে তানিয়ার এভাবে মৃত্যু হবে তারা কখনও কল্পনাও করিনি। তার মৃত্যুতে আমার সাড়ে তিন বছরের ছেলেটি মা হারা হলো।
এ নিয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট তিনজন চিকিৎসকের মৃত্যু হলো। এর আগে রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে নিগার নাহিদ দিপু নামে একজন নারী চিকিৎসক ও পরবর্তীতে গত কয়েকদিন আগে হবিগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন শাহাদাত হোসেন হাজরা মারা যান।
নারী চিকিৎসক তানিয়া সুলতানার মৃত্যুর পর জানতে চাইলে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডাক্তার আয়েশা আক্তার বলেন, তানিয়া সুলতানা ডেঙ্গু সাসপেক্ট রোগী হিসেবে ভর্তি ছিলেন। রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) মৃত্যু রিভিউ কমিটির রিপোর্ট দেয়ার আগে তানিয়া সুলতানার মৃত্যু ডেঙ্গুতে হয়েছে কি-না, তা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত মাত্র ৮ জন বলা হলেও বেসরকারি হিসাবে এ মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে তিন গুণ বলা হচ্ছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, বেসরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে বলার কিছু নেই। তবে আমাদের ডেথ রিভিউ কমিটি মৃত ব্যক্তির চিকিৎসা-সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হলেই ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, (১ জানুয়ারি থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত) চলতি মৌসুমে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ২৫৬ জন। মোট আক্রান্ত রোগীর মধ্যে চলতি মাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক ৭ হাজার ১১২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
এমইউ/জেডএ/এমএস