নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের


প্রকাশিত: ১১:৪৭ এএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বেতন বৈষম্য দূরীকরণে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ভবনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা এ দাবি জানান।

তারা বলেন, নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করলেই শিক্ষকরা তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরতে পারবেন।

লিখিত বক্তব্যে ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমরা জেনেছি বেতন বৈষম্য বিষয়ক যে কমিটি হয়েছে, তার প্রধান হিসেবে অর্থমন্ত্রী রয়েছেন। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, ইতোমধ্যেই যিনি শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন এবং শিক্ষকদের ব্যাপারে প্রতিহিংসাপরায়ন বক্তব্য রেখে নিজেকে বির্তকিত করেছেন সেই ব্যক্তির নেতৃত্বাধীন কোনো কমিটি শিক্ষকদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আমরা অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি। যেখানে শিক্ষকরা তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।’

চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, শিক্ষকদের চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার জন্য আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেশ করা হোক। বাস্তবমুখী ও গঠনমূলক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ঈদের পরে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’ এমনকি আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এসময় অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের বিষয়টি উল্লেখ করে মাকসুদ কামাল বলেন, ‘শিক্ষকদের বেধে দেয়া ২৪ ঘণ্টার সময়ের মধ্যে তিনি বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চেয়েছেন। তার জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু তিনি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে অতিকথন করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে পূর্বের ন্যায় বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন। তার (অর্থমন্ত্রী) এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি শিক্ষকদের অসম্মান হেয় প্রতিপন্ন করেছেন।’

এ শিক্ষক নেতা বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী দেশের উচ্চশিক্ষাকে ধ্বংস করা এবং শিক্ষাঙ্গন অশান্ত করার এক নীল নকশা বাস্তবায়নে নেমেছেন। আমাদের প্রশ্ন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে সাবেক আমলা ও বর্তমান আমলাপক্ষের একজন অর্থমন্ত্রী হয়ে তার পক্ষে বিভ্রান্তিকর তথ্যসংবলিত এমন বক্তব্য দেওয়া কি শোভা পায়? মূলত উচ্চশিক্ষাকে অবহেলা করে বা শিক্ষাব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার না দিয়ে কোনো জাতি তার ইপ্সত উন্নতি সাধন করতে পারে না। তাই আমরা দেশের সামগ্রিক শিক্ষব্যবস্থা ও জাতীয় অগ্রগতির স্বার্থে অবিলম্বে শিক্ষকদের উত্থাপিত সকল দাবি-দাওয়া পূরণের জোর দাবি জানাই।’

এদিকে অর্থমন্ত্রীকে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ছাড়া কথা না বলার আহ্বান জানিয়ে ফেডারেশনের এ মহাসচিব বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অধ্যাপকদের যেভাবে পদোন্নতি হয় তা বেশ অস্বচ্ছ। তাই অর্থমন্ত্রীকে উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত ছাড়া কোনো ধরনের অসার বক্তব্য না দেয়ার আহ্বান জানাই।’

এসময় শিক্ষকদের দাবি পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে এ শিক্ষক নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট করে কিছু না বলা পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন থেকে বিন্দু মাত্রও পিছু হটবো না। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই আমাদের বিষয়টি দেখবেন। কারণ তিনি আমাদের ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক নেতা অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আ জ ম শফিউল আলম ভূঁইয়া, অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. জাফর আহম্মদ ভূঁইয়া প্রমুখ।

এমএইচ/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।