ব্লু-ইকোনমি সহযোগিতা জোরদারে সম্মত বাংলাদেশ-মাল্টা
বাংলাদেশ ও ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ দেশ মাল্টা উভয় দেশের মধ্যে বিশেষ করে সামুদ্রিক ও ব্লু-ইকোনমির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে জোরদারে ‘সহযোগিতার নতুন যুগ’-এ প্রবেশ করতে সম্মত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে মাল্টার রাজধানী ভ্যালেটায় অনুষ্ঠিত প্রথম সরকারি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে উভয় দেশ এই চুক্তিতে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং মাল্টার ফরেন অ্যান্ড ট্রেড প্রমোশন মিনিস্টার কারমেলো আবেলা নিজ-নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন। পারস্পরিক স্বার্থে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে বিশেষ করে অর্থনৈতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে মতবিনিময় করেন দুই মন্ত্রী।
বৈঠক শেষে দু’দেশের মধ্যে নিয়মিত রাজনৈতিক আলোচনা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ একাডেমির সহযোগিতার দু’টি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
দু’দেশের দ্রুত ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বিবেচনায় নিকট ভবিষ্যতের সুযোগগুলো তৈরিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদের মধ্যেও বিনিময় করতে সম্মত হন দুই মন্ত্রী।
বর্তমানে মাল্টা ইউরোপে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশেরও বেশি প্রবৃদ্ধি ভোগ করছে এবং চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
উভয় দেশ উচ্চস্তরের উৎপাদনের ক্ষেত্রে ফার্মাসিউটিক্যালস, ফিনটেক, ব্লক এবং চেইন প্রযুক্তির মতো নতুন ব্যবসার জন্য অভিজ্ঞতা এবং ধারণা বিনিময় করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ আন্তর্জাতিক সংস্থায় অভিবাসন ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অন্যান্য বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে নির্বাচনের সময় একে অপরের প্রার্থীকে সমর্থন করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
মাল্টার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং তিনি এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে অব্যাহত সহায়তা প্রদানেরও আশ্বাস দেন।
মাল্টায় দুই দিনের সরকারি সফরকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পৃথকভাবে দেশটির প্রেসিডেন্ট ড. জর্জ ভেল্লা ও প্রধানমন্ত্রী জোসেফ মস্কাটের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। মাল্টার প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গাদের প্রতি বিশাল উদারতার জন্য বাংলাদেশকে অভিবাদন জানান।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে তিনি শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বের স্থিতিশীলতার কথা উল্লেখ করেন।
মাল্টার প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সামুদ্রিক শিল্প ও ব্লু-ইকোনমি সহযোগিতা মাল্টার জন্য ‘নিঃসন্দেহে একটি সুযোগ’, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নে তাদের জেনেরিক ফার্মা পণ্য নিবন্ধনে এবং বাজার সম্প্রসারণে সুবিধাজনক ভূমিকা রাখবে।
বিকেলে উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাল্টা চেম্বার অব কমার্স, এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি গ্রিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় ‘বাংলাদেশ মাল্টা বিজনেস ফোরাম’-এ যোগদান করেন।
মাল্টা ও গ্রিসের রাষ্ট্রদূত মো. জসিম উদ্দিন এবং মহাপরিচালক পশ্চিম ইউরোপ এবং ইইউ’র উইং মোহাম্মদ খোরশেদ খাস্তগীরসহ বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেপি/জেএইচ/জেআইএম