রোগীর চাপে ‘হিমশিম’ খাচ্ছে সেন্ট্রাল হাসপাতাল
রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে অনেকটা বানের পানির মতো ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। বাড়তি রোগীর চাপে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
তারা জানান, প্রায় এক মাস ধরে প্রতিনিয়ত অর্ধশতাধিক ডেঙ্গু রোগী ভর্তি থাকছেন। মাঝে মধ্যে অবস্থা এমন হচ্ছে যে, রোগীর মাত্রাতিরিক্ত চাপে বেড দেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। বেড পেতে অনেক সময় রোগীর স্বজনরা বাড়তি টাকা দেয়ারও অফার করছেন।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালে ৬৬ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে নতুন রোগী ১৬। বিপরীতে আগের ভর্তি ২৭ রোগী চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।
সোমবার (২২ জুলাই) হাসপাতালে ৭৭ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিলেন। নতুন ভর্তি হন ১৮ জন। বিপরীতে আগের ভর্তি থাকা ১৫ রোগী চিকিৎসা নিয়ে চলে যান।
২১ জুলাই হাসপাতালে নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন ১১ জন। চিকিৎসাধীন ১৮ রোগী ছাড়পত্র নিয়ে চলে যান। ওইদিন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৪।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এভাবে প্রতিদিনই এ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। সেই সঙ্গে চিকিৎসা নিয়ে কিছু রোগী হাসপাতাল ছাড়ছেন।
সেন্ট্রাল হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সার্বিক চিত্র
তারিখ |
পুরনো রোগী |
নতুন রোগী |
ছাড়পত্র পাওয়া রোগী |
মোট ভর্তি |
১৫ জুলাই |
৭৪ |
২৩ |
২১ |
৭৬ |
১৬ জুলাই |
৭৬ |
১৪ |
১৮ |
৭২ |
১৭ জুলাই |
৭২ |
৩২ |
৩৫ |
৬৯ |
১৮ জুলাই |
৬৯ |
১২ |
১০ |
৭১ |
১৯ জুলাই |
৭১ |
১৬ |
৭ |
৮০ |
২০ জুলাই |
৮০ |
২১ |
২০ |
৮১ |
হাসপাতালে কর্তব্যরত এক সেবিকা বলেন, ডেঙ্গু রোগী নিয়ে কয়েক দিন ধরে আমরা বেশ চাপে আছি। প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এর সঙ্গে পুরনো রোগী তো আছেই। একসঙ্গে এত ডেঙ্গু রোগী সামাল দিতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে রোগীর চাপ বেশি থাকলেও আমাদের এখানে এ বছর কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।
রোগী ভর্তির দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, এবার ডেঙ্গু রোগীর চাপ খুব বেশি। ডেঙ্গু যেন মহামারি আকার ধারণ করেছে। রোগীদের বেড দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমনকি বেড পেতে রোগীর স্বজনরা টাকার অফারও করছেন। রোগীর স্বজনদের বোঝা উচিত, যাদের ভর্তি করা সম্ভব আমরা তাদের এমনিই ভর্তি করছি। এজন্য বাড়তি কোনো টাকা দিতে হচ্ছে না।
সার্বিক বিষয়ে হাসপাতালের ডেপুটি ডিরেক্টর এ কে এম মোজাহার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ডেঙ্গু রোগীর বেশ চাপ থাকলেও আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছি। এ বছর আমাদের হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। যারা ভর্তি আছেন তারাও ভালো অবস্থায় রয়েছেন। চিকিৎসাসেবা নিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই হাসপাতাল ছাড়তে পারছেন। সাধারণত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে চার-পাঁচদিন ভর্তি রাখা হয়।
এমএএস/এএইচ/আরএস/এমএআর/জেআইএম