‘রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট’ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৯

উত্তরা-১৮ নম্বর সেক্টরের ‘এ’ ব্লকে নির্মাণাধীন ‘রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প’ নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন প্রকল্পের আওতায় ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা।

অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে তারা রিয়েল এস্টেট আইন-২০১০ অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণ বাবদ মাসিক বাসাভাড়ার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত চার কিস্তিতে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিলম্ব ফি ছাড়া টাকা দেয়ার সুযোগ চেয়েছেন।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট মালিক কল্যাণ সমিতি’-এর ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ ও দাবি জানানো হয়।

প্রকল্পের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জেনারেটর সেট ইউএসএ, জাপান, ইউকে ও জার্মানি এই চার দেশের যে কোনো একটি দেশ থেকে অ্যাসেম্বল্ড ও পরীক্ষিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে চাইনিজ অ্যাসেম্বল্ড এবং টেস্টড লাগানো হয়েছে। একইভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, নির্মাণাধীন সময়ে কোন প্রকার সুদ ছাড়া বরাদ্দ পাওয়াদের ৬ লাখ ৭১ হাজার টাকা করে চারটি কিস্তি পরিশোধ করার কথা। ফ্ল্যাট বসবাস উপযোগী করে বুঝিয়ে দেয়ার পর ৯ শতাংশ সুদসহ ৭ লাখ ১ হাজার টাকা করে আরও চারটি কিস্তি পরিশোধ করার কথা। এই সঙ্গে ইউনিলিটি বিল বাবদ এককালীন ৫ লাখ টাকা করে পরিশোধ করার কথা।

এ বিষয়টি তুলে ধরে সমিতির সভাপতি হামিদুর রহমান বলেন, নির্মাণকালীন সময়ে যে কারণে সুদবিহীন কিস্তি পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়েছিল, একই কারণে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী চার কিস্তির টাকা সুদবিহীনভাবে ৮ কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, স্বল্প আয়ের মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে ২০১২ সালে সরকার উত্তরা-১৮ নম্বর সেক্টরের ‘এ’ ব্লকে রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের কাজ শুরু করে। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফ্ল্যাট সম্পূর্ণ ব্যবহার উপযোগী করে বুঝিয়ে দেয়ার কথা।

‘কিন্তু এই সময়সীমা অতিক্রমের পর প্রায় আড়াই বছর পার হওয়া সত্ত্বেও আজ অবধি ফ্ল্যাট আইডি প্রাপ্তদের বসবাসের উপযোগী করে ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। এতে বরাদ্দ পাওয়া ব্যক্তিরা আর্থিক দিক দিয়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন’ বলেন হামিদুর রহমান।

তিনি বলেন, চতুর্থ কিস্তি পরিশোধের পর হতে প্রকল্প সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত রিয়েল এস্টেট আইন-২০১০ মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্ত অ্যালোটিদের (বরাদ্দ পাওয়াদের) পিডব্লিওডির জারি করা নির্ধারিত হারে মাসিক বাসাভাড়ার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রকল্পের সকল প্রকার ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল কাজগুলো সমন্বয়হীনতার কারণে সময়মত শেষ হয়নি এমন অভিযোগ করে বলা হয়, লিফট, জেনারেটর, সাব-স্টেশন, ফায়ার হাইডেন, সেলার, সিসি টিভি, পিএবিএক্স, মোবাইল টাওয়ার, সিকিউরিটি লাইট রোড লাইট, এসটিপি প্লান্ট, সুয়ারেজ, পয়ঃশোধনাগার এবং দুটি সোর্স ব্যবহার করে এসএস-২, এসএস-৬, সাবস্টেশন থেকে ১০টি ফিডার ক্যাবল চালু করা হয়নি।

১০টি ফিডার লাইনের পরিবর্তে ৫টি ফিডার লাইনের যে সংশোধিত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা প্রকল্প এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতের পরিবর্তে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহ-সভাপতি নাসিরুজ্জামান মিয়া, মইনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন।

এমএএস/জেএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।