ক্ষতিপূরণ চাওয়া ডেঙ্গু রোগীর বাসায় মেয়র খোকন
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন খিলগাঁও এলাকার বাসিন্দা আইনজীবী তানজিম আল ইসলামের স্ত্রী ডেঙ্গু আক্রান্ত সুমি আক্তারকে দেখতে গিয়েছিলেন ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
শনিবার খিলগাঁও এলাকার আজম আলী মসজিদ সংলগ্ন একতা সড়কের ৮০৩/এ নম্বর বাসায় ডেঙ্গু আক্রান্ত সুমি আক্তারকে দেখতে যান তিনি। এ সময় ওই বাসার চতুর্থ তলায় সিটি কর্পোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত সুমি আক্তারের সঙ্গে মেয়র কথা বলেন এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন। রোগীকে দুই ডালা ফলমূল উপহার হিসবে দেন তিনি।
মেয়র দেখতে আসার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আইনজীবী তানজিম আল ইসলামের স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, মেয়রকে বলেছি আর কেউ যেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যেন গ্রহণ করেন। মশক নিধনের ওষুধ যেন ভালোভাবে ছিটান তারা। মেয়র আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, মশক নিধনের জন্য ঠিকমতো ওষুধ ছিটানো হচ্ছে, পাশাপাশি আরও প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে স্ত্রী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় ডিএসসিসির কাছে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে সংস্থার মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে আইনি (লিগ্যাল) নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজিম আল ইসলাম। ব্যক্তিস্বার্থে গত বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠানো হয়। এরপরই আজ সুমি আক্তারকে দেখতে গেলেন মেয়র।
নোটিশে বলা হয়, গত ২৯ জুন আমার স্ত্রী (নোটিশদাতার স্ত্রী) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, তার রক্তে প্লেটলেট ১১ হাজারে নেমে অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে দাঁড়ায়। চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পাঁচদিন হাসপাতালে থেকে আংশিক সুস্থতা লাভ করে। গত বছরের অক্টোবরে আইনজীবী তানজিম নিজেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন।
নোটিশে আরও বলা হয়, নোটিশগ্রহীতাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে মশা নিধন করা ও শহরকে বাসযোগ্য নগরীতে রূপান্তরিত করা। কিন্তু এ এলাকায় (খিলগাঁও থানার ১ নম্বর ওয়ার্ড) প্রায় তিন বছর বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত মশা নিধনে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। এমনকি সচেতনতামূলক প্রচারণাও করা হয়নি। ভয়ঙ্কর এডিস মশা নিধনে আপনাদের ব্যর্থতা স্পষ্ট প্রতীয়মান ও এর জন্য আপনারা দায়ী।
আমার স্ত্রীর চিকিৎসা ও তার ডেঙ্গুর কারণে সন্তানসহ পরিবার অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন। এ ক্ষতির দায়ভার আপনাদের ওপর বর্তায়। কারণ নাগরিকদের মশার উৎপাত থেকে বাঁচানোর দায়িত্ব আপনাদেরই। আমার স্ত্রীর চিকিৎসাবাবদ ৫০ হাজার টাকা, আমার আইনজীবী হিসেবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার জন্য আড়াই লাখ টাকা, দুই সন্তানের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির পরিমাণ ও পরিবারের নিদারুণ মানসিক ক্ষতির পরিমাণ অপূরণীয় হলেও, ৪৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হলো। অর্থাৎ আপনাদের মশা নিধনে ব্যর্থতার দরুন আমার মোট ৫০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষয়ক্ষতির জন্য আপনারা আইনত দায়ী।
নোটিশে আরও বলা হয়, নোটিশ পাওয়ার সাত কার্যদিবসের মধ্যে আপনাদের ব্যর্থতার দরুন আমার স্ত্রীর ডেঙ্গু আক্রান্তের কারণে আমাকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে বাধিত করবেন। একই সঙ্গে এডিস মশা নিধনে কী কী পদক্ষেপ ও কত টাকা ব্যয় করেছেন, তা তথ্য অধিকার আইনমতে লিখিতভাবে অবহিত করতে অনুরোধ করা হলো। সর্বোপরি এডিস মশা নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ও খিলগাঁওয়ের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মশা নিধনে তিনদিনের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ আদায়ে ও প্রতিকার চেয়ে রিট করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এএস/বিএ/জেআইএম