মরমী কবি বাউল শাহ আব্দুল করিম : গানে ও প্রাণে


প্রকাশিত: ০৩:৫০ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫

তাঁর সাথে দীর্ঘ আড্ডা ১৯৭৭ সালে। এক মালজোড়া গানের (প্রশ্ন -উত্তর ) অনুষ্ঠানে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী শিল্পী ছিলেন ময়মনসিংহের বাউল আলী হোসেন সরকার। এর পর দেখা হয়েছে অনেক বার। আমিও আমার লেখা বাউল গানের বই `` বাউলের আর্তনাদ`` , ``হৃদে গাঁথা মালা`` - তুলে দিয়েছি তাঁর হাতে। তিনিও দিয়েছেন তাঁর লেখা বই। প্রবাস থেকে দেশে গেলে, সুযোগ পেলেই আড্ডা দিয়েছি তাঁকে ঘিরে। সিলেটের ``বইপত্র`` -তে আমার সুহৃদ প্রতিম কবি মোস্তাক আহমাদ দীন এর আয়োজনেও হয়েছে নানা বিষয়ে আড্ডা। শাহ করিম  ছিলেন একজন অসাধারণ, নির্লোভ, বিনয়ী সাধক মানুষ।

তিনি প্রাণ খুলে গেয়েছেন... ``ভব সাগরের নাইয়া.../ মিছে গৌরব করো রে পারার ধন লইয়া.....`` মনে পড়ছে, “বুঝলে কি, বুঝবে কি ওরে ও মন ধুন্ধা/ এই দুনিয়া মায়ার জালে বান্ধা।” গানটি যখন আশির দশকের প্রথম দিকে ‘বেদ্বীন’ ছায়াছবিতে গীত হয় তখনি সঙ্গীত পিপাসু আত্মান্বেষী মানুষের মনে একটি চিরায়িত মরমীতত্ত্বের পূর্ণঝলক জাগিয়েছিলেন মরমী কবি শাহ আব্দুল করিম। একটি গহীন ভাটি জনপদের মানুষ তিনি। সঙ্গীত ছিল তার নেশা। তিনি মুখে যে পয়ারগুলো বলতেন, তাই ছান্দসিক তাই গান। না কোনও অভাব কোনও অনটনই তাকে সাধনা থেকে রুখতে পারেনি। তিনি গেয়েছেন, লিখেছেন, তত্ত্ববিনিময় করেছেন, সঙ্গীততত্ত্ব তালিম দিয়েছেন শতাধিক শিক্ষানবীশ শিল্পী-সাধককে।

কবি শাহ আব্দুল করিমের গানের সাথে আমার প্রথম পরিচয় মুক্তিযুদ্ধের পরপরই। সিলেট বেতারের তিনি একজন নিয়মিত শিল্পী। “কোন মেস্তরী বানাইল কেমন দেখা যায়/ ঝিলমিল ঝিলমিল করেরে ময়ূরপংখী নায়” এরকম অগণিত সারী গানের প্রধানশিল্পী ছিলেন তিনি। তার সহশিল্পীরা ছিলেন একঝাঁক তুখোড় তরুণ-তরুণী। যারা এখন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন।

আবহমান বাংলার একটি জনপ্রিয় গানের অনুষ্ঠান হচ্ছে পালাগান। সিলেট বিভাগ অঞ্চলে যা ‘মালজোড়া গান’ বলেই পরিচিত। ১৯৭৬ সালের শীতকালে সেই প্রথম একটি গানের আসরে দীর্ঘঙ্গী পুরুষ শাহ আব্দুল করিমকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়। মনে পড়ছে, সেই রাতের প্রশ্ন উত্তর-পর্ব গানের অনুষ্ঠানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ময়মনসিংহের (পরে সিলেটে বসবাসকারী) আরেক বাউল সাধক কবি আলী হোসেন সরকার। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন শাহ আব্দুল করিম ও আলী হোসেন সরকার দুজনই একই ওস্তাদের ছাত্র। তাঁদের ওস্তাদ ছিলেন ময়মনসিংহের প্রখ্যাত সাধক কবি রশিদ উদ্দিন।

এরপর শাহ আব্দুল করিমের অনেকগুলো গানের আসরে শ্রোতা হওয়ার সুযোগ আমার হয়েছে। প্রশ্ন উত্তর-পর্ব গানে একজন বাগ্মী তার্কিক এবং যুক্তিবাদি হিসেবে তিনি সবসময়ই ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আর এভাবেই তিনি গোটা বাংলাদেশ এমনকি বিদেশে অবস্থানকারী বাঙালি সঙ্গীত প্রেমীদের কাছে হয়ে ওঠেন একজন পরম নমস্য ব্যক্তিত্ব।

কবি শাহ আব্দুল করিম ১৩২২ বঙ্গাব্দের ফাগুন মাসে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কবির নিজের ভাষ্য অনুযায়ী “মা বলেছেন জন্ম আমার ফালগুন মাসের প্রথম মঙ্গলবার।” তাঁর পিতার নাম শাহ ইব্রাহিম আলী এবং মাতা নাইয়রজান বিবি।
 
দুই.
এই প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সাধকের সান্নিধ্যে বসে তাঁর কথা শোনার, তাঁর সাথে আড্ডা দেয়ার সুযোগ হয়েছে আমার কয়েকবারই। তিনি বলেন, আমি গান গাই, গান লিখি মনের খোরাক হিসেবেই। গান গেয়ে আমি আমার আমিকেই খুঁজি। ২০০২ সালে সিলেটের অভিজাত বই বিপণী ‘বইপত্র’ এ আড্ডা হয় একটি দীর্ঘ বিকেল। কবি বললেন, ভালো লাগছে আমার গানগুলো এখন অনেক প্রখ্যাত শিল্পীরাই গাইছেন। গানগুলো ব্যাপক আদৃত হচ্ছে। কবি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের প্রতি। যিনি ‘জলসাঘর’ নামক একটি প্রামাণ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ টেলিভিশনে শাহ আব্দুল করিমকে নতুন করে পৌঁছে দিয়েছিলেন বাংলার ঘরে ঘরে।

শাহ আব্দুল করিম প্রকৃত অর্থেই একজন অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদি মরমী কবি। সে প্রমাণ আমরা তার রচিত গানের পঙক্তি থেকে সহজেই পেতে পারি।

 ক.  গ্রামের নওজোয়ান হিন্দু  মুসলমান মিলিয়া বাউলা গান মুর্শিদি গাইতাম  আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম ...

 খ. আশেকের রাস্তা সোজা ...  আশেক থাকে মাশুক ধ্যানে, এই তার নামাজ এই তার রোজ ...

 গ. মন পাগলা তুই লোক সমাজে লুকিয়ে থাক  মন মানুষ তোর মনমাঝে আছেরে নির্বাক।

 ঘ. মনমাঝি তোর মানবতরী ভবসাগরে ভেসে যায়  বেলা গেলে সন্ধ্যা হলে পাড়ি দেওয়া হবে দায় ...।
কবি নিরন্তর সে সত্যটি তার গানে বার বার অন্বেষণ করেছেন তা হচ্ছে, সেই পরম সত্তা যে সত্তা নিয়ন্ত্রণ করছে এই মন-মানবমণ্ডল। শাশ্বত সত্যের মুখোমুখি নিজেকে দাঁড় করিয়েছেন শাহ আব্দুল করিম। তাঁর গান এভাবেই হয়ে উঠেছে সকল মানবগোষ্ঠীর আত্মদর্পণ।

 ভব সাগরের নাইয়া ...
 মিছা গৌরব করোরে পরার ধন লইয়া।
 একদিন তোমায় যাইতে হবে এই সমস্ত থুইয়া।।
 পরার ঘরে বসত করো, পরার অধীন হইয়া
 আপনি মরিয়া যাইবায় এইভব ছাড়িয়া।।
 কী ধন লইয়া আইলায় ভবে, কী ধন যাইবায় লইয়া
 ভবে আইয়া ভুলিয়া রইলায় ভবের মায়া পাইয়া।।
 বাউল আব্দুল করিম বলে, মনেতে ভাবিয়া
 মন্ত্র না  জানিয়া ঠেকলাম, কালসাপিনী ছুঁইয়া।।
 (কালনীর কূলে/ গান: ৪০)

এই যে মায়াঘোর, এই যে বিত্তবৈভব কিংবা কামসাগরের স্রোতে ভেসে যাওয়া, তা থেকে পরিত্রাণ খুঁজেছেন কবি। হ্যাঁ, এসব বিত্ত বৈভবের প্রকৃত মালিক কে? আমরা সবাই তো এর বাহক মাত্র। এই অস্থাবর ভূলোকের মায়া ছেড়ে যেতে হবে সবাইকেই একদিন।
 
তিন.
শিকড়ের অন্বেষণেই শুধু নয় শিকড়ের নিগূঢ় তত্ত্বে বার বার ডুব দিয়েছেন মরমী কবি শাহ আব্দুল করিম। তাঁর লেখা গ্রন্থের সংখ্যা এ পর্যন্ত দুটি। আফতাব সঙ্গীত, গান সঙ্গীত, কালনীর ঢেউ (১৯৮১), ধলমেলা (১৯৯০), ভাটির চিঠি (১৯৯৮) এবং কালনীর কূলে (২০০১)। তাঁর লেখা আরো কয়েকশত গান প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।

সৃষ্টিতত্ত্ব, নবীতত্ত্ব, রাধাকৃষ্ণতত্ত্ব, ওলিস্মরণ, মুর্শিদি, মারফতি, ভক্তিগীতি, মনশিক্ষা, দেহতত্ত্ব, কারবালাতত্ত্ব, বিরহ, বিচ্ছেদ, দেশাত্মবোধক, সমাজ বিনির্মাণ বিষয়ক প্রায় সহস্র গানের জনক এই সাধক কবি। তার দেহতত্ত্ব, বিচ্ছেদ-বিরহ, মুর্শিদি গানগুলো এ সময়ের অনেক প্রতিভাবান নবীন শিল্পীরা গাইছেন। ব্যাণ্ড সঙ্গীতের তাল-লয়েও গীত হচ্ছে শাহ আব্দুল করিমের গান।

 ‘গাড়ি চলে না, চলে না, চলে নারে গাড়ি চলে না
 চড়িয়া মানব গাড়ি, যাইতেছিলাম বন্ধুর বাড়ি
 মধ্যপথে ঠেকলো গাড়ি, উপায়বুদ্ধি মিলে না।
 আব্দুল করিম ভাবছে এবার, কণ্ডেম গাড়ি কী করবো আর
 সামনে ভীষম অন্ধকার, করতেছি তাই ভাবনা।।
 (কালনীর কূলে/ গান: ৬১)

এই গানটি গীত হওয়ার আগে কি ভাবা যেত গানটি এতো বেশি জনপ্রিয় হতে পারে?

শাহ আব্দুল করিম একজন স্বশিক্ষিত কবি। তাঁর চেতনাই তাঁর সৃজনের জ্ঞানশিক্ষা। বাংলার মাটি, জল, সবুজ, সুন্দরমা প্রকৃতিই তাঁর পাঠশালা। সেই পাঠশালার চিত্রছায়ায় পাঠ নিতে নিতে তিনি অনুধাবন করেছেন জীবনকে, জীবনের একক নিয়ামক শক্তিকে।

 কেউ বলে দুনিয়া দোজখ, কেউ বলে রঙের বাজার
 কোনো কিছু বলতে চায় না, যে বুঝেছে সারাসার।
 (কালনীর কূলে/ গান: ৪৯)
 
চার.
শাহ আব্দুল করিম একজন প্রখর সমাজ সচেতন বাউল কবি। বিভিন্ন গণস্বার্থ বিষয়ক ইস্যুতে তিনি গান রচনা করেছেন অগণিত। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধপূর্ব এবং যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তিনি গ্রামে গ্রামান্তরে, হাটে বাজারে গণ জাগরণীর গান গেয়ে বেরিয়েছেন মাসের পর মাস, বছরের পর বছর। সেসব গানগুলো তার ‘কালনীর ঢেউ’ গ্রন্থে গ্রন্থিত হয়েছে। তাঁর গানে উঠে এসেছে আমাদের মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত সমাজের চাওয়া পাওয়ার কথা। তিনি গেয়েছেন উদার কণ্ঠে:

শোনেন বন্ধুগণ, করা ভালো জন্ম নিয়ন্ত্রণ
ভবিষ্যত উজ্জ্বল হইবে করিলে নিয়ম পালন।
 
জনসংখ্যা বাড়িতেছে, জমি কিন্তু বাড়ে না
ভবিষ্যত কি হইবে করো না বিবেচনা
ভালোমন্দ যে বুঝে না, পাছে পাবে জ্বালাতান।।
 
বিচার করে দেখো সবাই যে চলে হিসাব ছাড়া
অধিক সন্তান জন্মাইয়া হয়েছে দিশেহারা
শিক্ষা-দীক্ষা খাওয়া পরা, চলে না ভরণপোষণ।।
(কালনীর কূলে/ গান: ১৩০)

এই বাউল কবির গানে বাংলাদেশের গণ মানুষের আকাক্ষার কথা যেমনি প্রতিফলিত হয়েছে তেমনি লিপিবদ্ধ করেছেন তিনি প্রতিটি গণ-আন্দোলনের কথাও। মহান ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান-আন্দোলন, সত্তুরের নির্বাচন, একাত্তরের  মুক্তিযুদ্ধ, পঁচাত্তরে জাতির জনককে সপরিবারে হত্যার   মর্মান্তিক কাহিনী, দেশে সামরিক শাসকের কালো ছায়া, নব্বই- এর গণঅভ্যুত্থান এসবই স্পষ্ট এবং জোরালোভাবে অত্যন্ত সত্যনির্ভর হয়ে উঠে এসেছে কবি শাহ আব্দুল করিমের গানে। ‘স্বাধীন বাংলার ইতিহাস’ পর্বে তাঁর লেখা একটি দীর্ঘ গানের কয়েক পঙক্তি এখানে প্রণিধানযোগ্য।

 বাংলার দালাল রাজাকার, করেছিল কি ব্যবহার
 তাহাদের কথা আমার আজো মনে পড়ে
 বাংলার দুর্দিনে এই দালাল রাজাকারে
 ইসলামের দোহাই দিয়া শত্রুকে সমর্থন করে।।
 
 শেখ মুজিব ঘোষণা দিলেন, বাঙালি অস্ত্র ধরিলেন
 ওসমানী দায়িত্ব নিলেন, মুজিব কারাগারে
 নজরুল, তাজউদ্দিন ছিলেন দেশের ভিতরে
 দেশপ্রেমিকগণ নিয়ে তখন মুজিব নগর সরকার গড়ে।।
 (কালনীর কূলে/ গান: ১৩৭)
 
পাঁচ
এই কিংবদন্তি বাউল কবি ১৯৬৪ এবং ১৯৮৫ সালে প্রবাসী বাঙালিদের আমন্ত্রণে সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশ নিতে দুবার ইংল্যান্ড ভ্রমণ করেছেন। তিনি ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলনে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। মওলানা ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহওরাওয়ার্দী, জাতির জনক শেখ মুজিবের সান্নিধ্য তাঁর জীবনের চির মধুর স্মৃতি। তিনি বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত ‘একুশে পদক’ পেয়েছেন ২০০১ সালে।

শাহ আব্দুল করিম ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০০৫’- এ আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পেয়েছেন। নিউইয়র্কে বসে এনটিভি’র কল্যাণে এই অনুষ্ঠানটি যখন দেখছিলাম তখন আপ্লুত হচ্ছিলাম বারবার। অডিটরিয়াম ভর্তি দেশের শ্রেষ্ঠ গুণীজন যখন দাঁড়িয়ে এই কৃতি পুরুষকে সম্মান জানাচ্ছিলেন তখন এই নিউইয়র্কে অবস্থান করে আমি নিজেও যেন হঠাৎ কখন টিভি সেটের সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম। তিনি তো আমাদের লোকজ সংস্কৃতি, সাহিত্যকে শুধু সমৃদ্ধই করেননি, চিরদিন থাকবেন আমাদের মৌলিক চেতনার প্রদীপ হয়ে। তাকে নিয়ে একটি প্রমাণ্যচিত্র নির্মাণ করছেন চিত্র নির্মাতা শাকুর মজিদ। ‘ভাটির পুরুষ’ নামে এই চিত্রকর্মটি একটি দলিল। নিরহংকারী, সদালাপি, নিঃস্বার্থবান এই মহান বাউল কবি আবহমান বাংলার মরমী প্রাণের ধ্রুব প্রতীক। তাঁর জন্ম ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯১৯। ১২ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তিনি পরপারে চলে যান।তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। তাঁর গান হোক স্বরূপ অন্বেষণে আমাদের পাথেয়।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।