যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে আমির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২০ পিএম, ০৯ জুলাই ২০১৯

যৌতুকের টাকা না পেয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকার গৃহবধূ শারমিনকে কুপিয়ে হত্যা করে তার স্বামী আমির হোসেন (২৮)। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এ তথ্য জানিয়েছে।

সোমবার (৭ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম ইপিজেড থানাধীন এলাকা থেকে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) একটি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে আমিরকে গ্রেফতার করে। ভোলা জেলার দৌলতখান থানার চর যমুনা গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে আমির।

তাকে গ্রেফতারের পর পিবিআই বলছে, ঘাতক আমির এর আগে আরও দুটি বিয়ে করে। সেখানে তার সন্তানও আছে। যৌতুকের টাকা আদায়ের লক্ষ্যে একাধিক বিয়ে করেছে। সর্বশেষ শারমিনের কাছে যৌতুক বাবদ ৫০ হাজার টাকা না পেয়ে খুন করে পালিয়ে যায়।

মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডি পিবিআই সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।

তিনি বলেন, গত চার মাস আগে বিয়ের পর মোহাম্মদপুর থানাধীন রায়েরবাজার মেকআপ খান রোডের বর্তমান-বাসা নং-৮৬/১ বি বাসায় ওঠে আমির। গত ২ জুলাই ভোরে গোঙ্গানির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করেন বাড়ির ম্যানেজার। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারমিনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শারমিনের বাবা ছাবেদ আলী বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন।

Amir-2

মামলা সূত্রে জানা যায়, আমির হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জেরে গত চার মাস আগে বিয়ে হয় শারমিনের। শ্বশুরের বাসায় গিয়ে গত ৩০ জুন ১০ হাজার টাকা যৌতুক চেয়ে বসে আমির। টাকা নেই জানালে শারমিনকে নিয়ে চলে আসে। পরদিন গত ১ জুলাই একা শ্বশুরের বাসায় আসে এবং যৌতুক হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে আমির। তাকে এক হাজার টাকা দিয়ে ছাবেদ আলী বলেন, টাকা নেই। এ কথা শুনে আমির বলে, তার মেয়েকে (শারমিন) শেষ করে দেবে। রাত সাড়ে ৯টায় ফোন করে পুনরায় টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে শারমিনকে খুন করার হুমকি দেয়।

পরদিন ভোর সাড়ে ৪টায় শাশুড়িকে ফোন করে আমির জানায়, ‘আপনার মেয়েকে খুন করে খাটের নিচে রেখেছি, লাশ নিয়ে যান’। বাদীর মেয়ের রায়েরবাজারের বাসার ম্যানেজারের স্ত্রী মমতাজের মাধ্যমে খবর পেয়ে সকালে পঙ্গু হাসপাতালে যান ছাবেদ আলী। গুরুতর জখম এবং পিঠের ওপরে ক্ষত চিহ্ন, সারা শরীরে রক্তমাখা মৃত অবস্থায় মেয়েকে দেখতে পান। পুলিশ সদরের নির্দেশে পিবিআই মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ ও আসামি আমির হোসেনকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআই জানতে পারে, শারমিনকে বিয়ের আগে আরও দুটি বিয়ে করে আমির। তার বড় স্ত্রীর নাম শাহিনা। সেখানে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মেজো স্ত্রীর নাম তাসলিমা। শারমিন আমিরের তৃতীয় স্ত্রী। যৌতুকের টাকা না পেয়ে এবং তার একাধিক স্ত্রী থাকায় পারিবারিক কলহের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ধারালো বঁটি দিয়ে কুপিয়ে শারমিনকে হত্যা করে। আমির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শারমিনকে কুপিয়ে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আজই তাকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে।

জেইউ/এমএসএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।