অবরোধের রাস্তায় ব্যাট-বল
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে রিকশা তুলে দেয়ার প্রতিবাদে রাজধানীর মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডাসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টের সড়কে আন্দোলনে নেমেছেন রিকশাচালকরা। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে রাজধানীর কুড়িল-রামপুরা-মালিবাগ সড়কের বিভিন্ন অংশ অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন তারা। ফলে থমকে আছে রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক প্রগতি সরণি।
রিকশাচালকদের অবরোধের কারণে মালিবাগ, রামপুরা হয়ে উত্তর বাড্ডা পর্যন্ত সড়কে যানবাহন স্থবির হয়ে আছে। বিপরীত দিকের সড়ক পুরোটাই ফাঁকা। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে কোনো গাড়ি এমনকি মোটরসাইকেলও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ফলে সকাল থেকেই এই সড়ক ব্যবহার করা কর্মক্ষেত্রগামী সাধারণ মানুষ পড়েছেন বিড়ম্বনায়। পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে তাদের।
এমন ভোগান্তির মাঝেও সড়কে দেখা গেল ক্রিকেট উন্মাদনা। উত্তর বাড্ডা ফুট ওভারব্রিজ থেকে নতুন বাজার যাওয়ার প্রধান সড়ক ফাঁকা পেয়ে এলাকার শিশু-কিশোরদের সঙ্গে সড়কের মাঝেই ক্রিকেট খেলায় মেতেছেন রিকশাচালকরা।
রাস্তায় অন্যদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলছিলেন সাইদুর রহমান নামের একজন রিকশাচালক। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সকাল থেকেই আমরা সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে রেখেছি। এতে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে ক্লান্তি দূর করতে আমরা কেউ কেউ এখানে ক্রিকেট খেলছি। অবরোধের কারণে ছোট ছেলেরা রাস্তা ফাঁকা পেয়ে এখানে খেলছে। তাই আমরাও তাদের সঙ্গে একটু খেলতে লেগেছি।’
রিকশাচালকরা একাংশ অবরোধ অব্যাহত রেখে সড়কের মাঝখানে বসে অবস্থান নিয়েছেন। অন্যরা দলবেঁধে রিকশা চলতে দেয়ার দাবিতে মিছিলে স্লোগান দিচ্ছেন।
এদিকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে বৈধ ও লাইসেন্সধারী রিকশাচালক, মালিকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে নগরীর সুশৃঙ্খল গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা বিনিময় শীর্ষক এক কর্মশালায় তিনি এ আহ্বান জানান।
মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘সবাই মিলে বসে আলোচনা করে যেকোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তাই আমি লাইসেন্সধারী রিকশাচালক-মালিকদের নগর ভবনে চায়ের দাওয়াত দিচ্ছি। তাদের আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘কুড়িল বিশ্বরোডসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তারা আন্দোলন করছে। তাদের সঙ্গে রিকশার মালিক এবং কিছু অচেনা মুখও দেখা গেছে। রাস্তায় রিকশা বন্ধ করা হয়েছিল যানজট কমানোর জন্য। কিন্তু তারা রাস্তা বন্ধ করে আন্দোলন করায় পুরো শহর স্থবির হয়ে পড়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক।’
এর আগে গত ৩ জুলাই রাজধানীর নির্দিষ্ট তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন। প্রাথমিকভাবে গাবতলী থেকে আসাদগেট হয়ে আজিমপুর ও সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত রিকশা চলাচল করবে না। এ ছাড়া কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে রামপুরা হয়ে খিলগাঁও-সায়েদাবাদ পর্যন্ত রিকশাসহ অন্যান্য অবৈধ ও অননুমোদিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
ডিটিসিএর (ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কন্ট্রোল অথরিটি) এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রিকশাচালকরা সোমবার থেকে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
এএস/এসআর/এমকেএইচ