নির্ধারিত ভাড়াই যেন আদায় হয়
গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহনের ভাড়া বাড়ালো সরকার। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এই ভাড়া কার্যকর হবে। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাস ও মিনি বাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটার দশ পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। সেই অনুযায়ী বাসের ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৭০ পয়সা, যা আগে ছিল ১ টাকা ৬০ পয়সা। আর মিনি বাসের ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৬০ পয়সায়, যা আগে ছিল ১ টাকা ৫০ পয়সা। একই সঙ্গে বাসের সর্বনিম্ন ভাড়া করা হয়েছে ৭ টাকা আর মিনিবাসের ৫ টাকা। বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভাড়া বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
একই সঙ্গে সিএনজি চালিত অটোরিকশার প্রথম ২ কিলোমিটারের ভাড়া ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৪০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৭ টাকা ৬৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর চালকের কাছ থেকে মালিকের দিনপ্রতি জমা নির্ধারণ ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০০ টাকা।
জ্বালানির মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিবহন ভাড়া নির্ধারণ করা হবে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি অবশ্যই হতে হবে যুক্তিযুক্ত, বাস্তবসম্মত। ভাড়া যেন যাত্রীদের নাগালের মধ্যে থাকে সেদিকও খেয়াল রাখতে হবে। এরপরও কথা হচ্ছে সরকার যে ভাড়া নির্ধারণ করে দেয় তার থেকে আদায় করা হয় অনেক বেশি। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বচসা লেগেই আছে। এ ছাড়া আছে সিটিং বাসের যন্ত্রণা। সিটিং এর নামে চিটিং এখন অনেকটা ওপেন সিক্রেট। অনেক সিটিং বাসের টিকেটও দেওয়া হয় না। যে যেভাবে পারে ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করছে। এক্ষেত্রে নিয়ম কানুনের কোনো বালাই নেই।
এছাড়া সিএনজি অটোরিকশার ক্ষেত্রে পুরনো অভিযোগ হচ্ছে মিটার বহির্ভূত ভাড়া আদায়ের। বেশিরভাগ সময়ই যাত্রীর চাহিদা অনুযায়ী গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না সিএনজি চালক। এর ওপর ভাড়া বৃদ্ধির ফলে অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা বলা মুশকিল।
এমনিতেই গণপরিবহনের নৈরাজ্যে যাত্রীরা অতিষ্ঠ। এখন আবার ভাড়া বৃদ্ধির খড়গ যেন মরার ওপর খাঁড়ার গা হিসেবে দেখা না দেয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের শুধু ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়ে বসে থাকলেই চলবে না যাতে নির্ধারিত ভাড়ায়ই আদায় হয় সেটিও নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তাহলে হয়তো যাত্রী দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমতে পারে।
এইচআর/এমএস