বিদেশি টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন : জেল-জরিমানা আজ থেকেই
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিদেশি টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দেখালে বিশেষ করে দেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন দেখালে আজ (সোমবার) থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে সরকার। এ জন্য আজ থেকেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালতে এ ধরনের অপরাধে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা জরিমানা অথবা দুই বছরের জেল দিতে পারবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখানো বিশেষত দেশীয় পণ্যের বিজ্ঞাপনসহ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বন্ধের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা নোটিশ জারি করেছিলাম। এছাড়া টেলিভিশনের ক্ষেত্রে আমরা যে ক্রম ঠিক করে দিয়েছি সেটা ক্যাবল অপারেটররা অনুসরণ না করলে অর্থাৎ সরকারি টেলিভিশনগুলো শুরুতে এবং বেসরকারি টিভিগুলোর সম্প্রচারের তারিখ অনুযায়ী যে ক্রম ঠিক করে দেয়া হয়েছে সে ক্রম অনুসরণ না করলে এবং স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ক্যাবল অপারেটর দেখা যায় তারা নিজেরা বিজ্ঞাপন প্রদর্শন এবং অনুষ্ঠান প্রদর্শন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
‘এসব বাস্তবায়নে আমরা তাদেরকে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলাম ৩০ জুন পর্যন্ত। সে সময়সীমা গতকাল শেষ হয়েছে। যে নির্দেশনা সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে সেগুলো যদি অনুসরণ করা না হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আজ থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই মর্মে নোটিশ জারি করেছিলাম। তারই প্রেক্ষিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকদের আজ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যেখানে এ আইন ভঙ্গ হবে সেখানেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ, গণমাধ্যম এবং আইনকে সমন্বিত রাখার স্বার্থে এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ভ্রাম্যমাণ আদালত দুই বছরের জেল দিতে পারবে, জরিমানা করতে পারবে। প্রথমবার অপরাধের জন্য ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা, দ্বিতীয়বার অপরাধের জন্য এক লাখ টাকা থেকে দুই লাখ টাকা এবং একইসঙ্গে দুই বছরের কারদণ্ডও দিতে পারবে। সে ক্ষমতা ভ্রাম্যমাণ আদালতের রয়েছে।’
আজ কি এ ধরনের কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও খবর সংগ্রহ করিনি। তবে এ বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নজর রাখতে বলেছি। একইসঙ্গে জেলা প্রশাসনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
টিভি খুললেই দেখা যায় বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে- এর জন্য কি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার প্রয়োজন আছে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রয়োজন আছে। কারণ কোথায় এ ব্যত্যয়গুলো ঘটছে সেটাতো দেখতে হবে। এটা সারাদেশের বিষয়তো এ জন্য দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত ছাড়াও অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অপরাধ যদি প্রমাণিত হয় তাহলে ক্যবল অপারেটরের লাইসেন্সও বাতিল হলে পারে।
তিনি বলেন, ক্যাবল অপারেটররা সময় চেয়েছিলেন। আমরা তাদের সময় দিয়েছি। তারা আরও সময় চান। কিন্তু অনির্দিষ্টকাল তো সময় দেয়া সম্ভব নয়। সে জন্যই আমরা আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।
এমইউএইচ/বিএ/এমকেএইচ/জেআইএম