‘গ্যাস পাচ্ছে, এটাই ভোক্তাদের বড় সুবিধা’

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৫৬ পিএম, ৩০ জুন ২০১৯

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বাদে সব শ্রেণির গ্রাহকের জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানোর আদেশ জারি করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। গ্যাসের দাম বেড়েছে ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ। এ বাড়তি দাম সোমবার (১ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, যাতায়াত, বাড়ি ভাড়া থেকে সবকিছুরই দাম বাড়বে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। এ পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলনে এক সংবাদকর্মী প্রশ্ন রাখেন, দেশের জনগণের অর্থে পরিচালিত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সর্বসাধারণ তথা ভোক্তাদের জন্য কী রাখল?

জবাবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বলে, ‘এতদিন ভোক্তারা গ্যাস পেতেন না, এখন পাচ্ছেন– এই হলো ভোক্তাদের সবচেয়ে বড় সুবিধা।’

এ সময় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এর চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম, সদস্য মো. মিজানুর রহমান ও রহমান মুরশেদ, মাহমুদউল হক ভূঁইয়া।

কোন গ্রাহকের গ্যাসের মূল্য বেড়ে কত দাঁড়িয়েছে, তা জানিয়ে সভাপতি মনোয়ার ইসলাম জানান, মিটারভিত্তিক গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে ১২ টাকা ৬০ পয়সা, এক চুলায় প্রতিমাসে ৯২৫ টাকা, দুই চুলায় ৯৭৫ টাকা, সিএনজি প্রতি ঘনমিটার ৪৩ টাকা, হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার ২৩ টাকা, বিদ্যুতে ৪ টাকা ৪৫ পয়সা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা, সার ৪ টাকা ৪৫ পয়সা, শিল্পে ১০ টাকা ৭০ পয়সা, চা-বাগানে ১০ টাকা ৭০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।

গাসের এই বাড়তি দাম ঘোষণার পর এক সংবাদকর্মী দুটো প্রশ্ন করেন। এক. এই সিদ্ধান্ত তো নির্বাচনের আগে আসার কথা ছিল। নির্বাচন একটা ফ্যাক্টর ছিল কি না এবং রাজনৈতিক বিবেচনা এতে কাজ করল কি না?

দুই. যে পরিমাণ এলএনজি সরবরাহ হওয়ার পরিকল্পনা ছিল, তা হয়নি। ১ হাজার ঘনমিটারের বিপরীতে এখন আমরা ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ পাচ্ছি। যে সময় শুনানি করেছেন তখন ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ ছিল। এলএনজি যদি না আসে, তাহলে ভোক্তাদের ওপর আগাম দাম চাপানো কতটা যৌক্তিক?

এর জবাবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান মনোয়ার ইসলাম বলেন, ‘আমরা যখন প্রথম শুনানি করি, এই বৃদ্ধিটা জাস্টিফাই ছিল না বলেই এবং সরকারের পক্ষ থেকে দাম বাড়ানোর যে বিষয়টা ছিল, সরকার সাপোর্ট দেয়ার কারণেই আমরা সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি। পরবর্তীতে দাম বাড়ানোর পুনরায় আবেদন আসে। ইতোমধ্যে ডিস্ট্রিবিউশনের পাইপলাইনের কিছু উন্নতি হয়েছে। সব হিসাব মিলিয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য এই বিষয়টি নির্ধারিত হয়েছে।’

এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন সাধারণ মানুষের কাছে একটা আতঙ্ক। এ কারণে যে, এরা শুধু গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। এই দাম বৃদ্ধি কত দিনের জন্য?

তিনি বলেন, ‘আমরা ২০১৭ সালে দাম বাড়িয়েছিলাম। এটা ২০১৯ সাল। একটা বিষয়, কমিশন দাম বাড়াতে পারে না। কমিশনের কাছে আবেদন আসলে বিশ্লেষণ করে, মত বিনিময় করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আবার যখন তারা আসবে, তখনই আমাদেরকে বিষয়টা বিবেচনা করতে হবে। আবার কবে বাড়বে বা বাড়বে না– কমিশনের পক্ষে এ ধরনের কমিটমেন্ট (প্রতিশ্রুতি) দেয়া সম্ভব নয়।’

দেশীয় গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ২৬ হাজার ৪৭৯ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ঘনমিটার, যা মোট উৎপাদনের ৭৫ শতাংশ। এলএনজি আমদানির পরিমাণ ৮ হাজার ৭৮২ দশমিক ৪৬ মিলিয়ন ঘনমিটার, যা মোট উৎপাদন ও আমদানির ২৫ শতাংশ। দেশীয় উৎপাদিত ও আমদানি করা মিলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট গ্যাসের পরিমাণ ৩৫ হাজার ২৬২ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ঘনমিটার। প্রতি বছর ৭ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা সরকার এ খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে বলেও জানায় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।

পিডি/এমএসএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।