নারীদের জন্য আলাদা ব্যাংক চান রওশন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:১৫ পিএম, ২৯ জুন ২০১৯
ফাইল ছবি

নারীদের জন্য পৃথক ব্যাংক চাইলেন বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ।

শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ দাবি করেন।

রওশন বলেন, নারী উদ্যোক্তার কথা অনেক শুনি। কিন্তু কোনো কাজ হয় না। বলা হয়েছিল একটি ব্যাংক দিয়ে দিতে। নারীদের জন্য একটি ব্যাংক দিতে। নারীরা এখান থেকে ঋণ নিতে পারে। নিজেরা সেই টাকা দিয়ে উদ্যোগ নিয়ে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে পারেন নিজের জন্য।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে এটা করা হলে অনেক ভালো হয়। মেয়েদের জন্য একটা ব্যাংক করে দেন এবং সেটার ব্রাঞ্চ যদি জায়গায় জায়গায় করে দেন তাহলে অনেক নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। সুযোগ-সুবিধা পাবে এবং তারা সে টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করে নিজে স্বাবলম্বী হবেন অন্যদের স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবেন।

অর্থবছর পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক দেশেই সেই দেশের সুবিধা অনুযায়ী অর্থবছর হয়। ভরা বৃষ্টির মৌসুমে আমাদের অর্থবছর শুরু হয়। সেই কথাটা আমাদের চিন্তা করা দরকার। যদি অর্থবছর পরিবর্তন করা যায় তাহলে আরও বেশি উন্নয়ন হবে বলে মনে করি।

রওশন বলেন, কালো টাকা সাদা করার নিয়ম প্রত্যেক দেশেই আছে। আমাদের যে বড় বড় ব্যবসায়ী আছেন তাদের এ সুযোগটা দিলে তারা এখানেই বিনিয়োগ করবেন। নইলে তারা টাকাগুলো বাইরে নিয়ে যাবেন। কালো টাকা যদি এখানে বিনিয়োগ করেন তাহলে সে সুযোগ করে দেবেন। কারণ এখানে ইন্ডাস্ট্রিগুলো করলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, ধান হলো। আমরা কিছুই করতে পারলাম না। কৃষকরা মাথায় হাত দিয়ে ধানে আগুন দিল। এটা কেন হলো?

এ সময় কৃষকরা কেন খেতে আগুন দিল সে বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রীর কাছে জবাব চান তিনি।

তিনি বলেন, অনেক লোক আছে যারা ছোট ছোট পুঁজি নিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে। এর আগেও একবার দেখা গেছে শেয়ারবাজারে ধস নেমেছিল। সেই অবস্থা থেকে এখন উঠে আসা গেছে। সে ধরনের অবস্থা কখনো যেন না হয়। ছোট ছোট বিনিয়োগকারী ওখানে বিনিয়োগ করেন। সেখান থেকে লাভ নিয়ে জীবন-যাপন করেন। সাধারণ মানুষ যেন পুঁজিবাজারে আগ্রহী হয় সে বিষয়ে আকর্ষণীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার উচ্চ থাকলে মানুষ পুঁজিবাজারে আগ্রহী থাকবে না।

রওশন এরশাদ বলেন, অর্থমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় প্রধানমন্ত্রী এ বাজেটের সঙ্গে বিশদভাবে সম্পৃক্ত হয়েছেন। কোথায় কী বরাদ্দ দিতে হবে, কোথায় কী কমাতে হবে এটা উনি ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, রাজস্ব আদায় আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতি বছরই আমাদের এ ধরনের বাজেট হয়। সরকারের রাজস্ব আদায় প্রতিবন্ধকতায় পরিণত হয়েছে। কারণ প্রতিবন্ধকতা দূর করতে যে ধরনের সংস্কার কার্যক্রম নেয়া দরকার সে ধরনের সংস্কার প্রস্তাব বাজেটে নেই।

তিনি বলেন, বরাবরের মতো আগামী বাজেটেও আমরা ঘাটতি লক্ষ্য করছি। যত সমস্যা এ ঘাটতি অর্থায়নে। অর্থমন্ত্রী প্রত্যাশা করছেন যে, বৈদেশিক সহায়তা পাবেন। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে অর্থ নেয়া হবে। এমনিতেই চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে ব্যাংক খাতগুলো। নগদ অর্থ নেই তাদের কাছে। ঋণ পাচ্ছেন না বেসরকারি খাত। অথচ সেখান থেকেই অর্থমন্ত্রী ঘাটতি পূরণের পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

বিরোধীদলীয় উপনেতা বলেন, ‘সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বেসরকারি বিনিয়োগনির্ভর কর্মসংস্থান সৃষ্টি। সে প্রেক্ষিতে ঘাটতি বাজেট পূরণে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার বেসরকারি খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ’

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম মুহম্মদ এরশাদের জন্য দোয়া চেয়ে রওশন বলেন, ‘উনি এখন অনেক বেশি অসুস্থ। আস্তে আস্তে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখন কিছুটা ভালোর দিকে। কিন্তু দুর্বল রয়ে গেছেন। সে জন্য আমরা মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত। আপনারা সবাই ওনার জন্য একটু দোয়া করবেন। ’

এইউএ/এএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।