৬৬০ কোটির সুফল নেই, এবার ৩৮২৮ কোটি

গত বছরের জুনে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম। নগরপিতা নির্বাচিত হওয়ার পরপরই যানজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ৬৬০ কোটি টাকার প্রকল্প পান তিনি। কিন্তু বছর প্রায় শেষ হতে চলল, গাজীপুর সিটির নাগরিকরা এর সুফল এখনও পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে।

এমন বাস্তবতায় মঙ্গলবার (২৫ জুন) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিন হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন জোনের প্রধান সংযোগ রাস্তাগুলো প্রশস্তকরণসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবারের একনেক সভায় নগরপিতা জাহাঙ্গীর আলমও উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার সিটি কর্পোরেশনের এ প্রকল্পের জন্য কয়েক মাস ধরে যোগাযোগ করে আসছিলেন। আজ এর অনুমোদন মিলল।

একনেক সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। সেখানে এক সংবাদকর্মী প্রশ্ন রাখেন, ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনকে যে টাকা দিলেন, এর আগেও বড় অংকের টাকা দেয়া হয়েছিল। জানি না আপনি সম্প্রতি ওই রাস্তায় গিয়েছেন কি না? ড্রেন সেই (আগের) অবস্থায়ই আছে। এভাবে যদি চলতে থাকে…’

জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে চলবে না। আপনারা খোঁজ-খবর রাখেন। এটা নাকের ডগায়, আমরাও খেয়াল রাখব।’

গত বছর ৬৬০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির নাম ছিল ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন (রাস্তা ও ড্রেন)’।

মঙ্গলবার অনুমোদন পাওয়া ‘গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন জোনের প্রধান সংযোগ রাস্তাগুলো প্রশস্তকরণসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ’ প্রকল্পটির তিন হাজার ৮২৮ কোটি টাকার মধ্যে সরকার দেবে তিন হাজার ৪৪৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। সিটি কর্পোরেশন দেবে ৩৮২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠিত হওয়ার পর নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায়। বিশেষ করে নগরীর রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত জরাজীর্ণ হওয়ায় এগুলোর উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়ে। নগরীর জনসাধারণের যাতায়াত ব্যবস্থা ও জীবনমান উন্নয়নের জন্য গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের জন্য নতুন এ প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।

নতুন এ প্রকল্পের আওতায় ৪৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ (বিটুমিনাস কার্পেটিংয়ের মাধ্যমে), ৪০ দশমিক ৫৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ (আরসিসির মাধ্যমে), ৮৯ দশমিক ৭০ কিলোমিটার ফুটপাত ও ড্রেন নির্মাণ, ২৩৯ দশমিক ৭৮ একর ভূমি অধিগ্রহণসহ বেশকিছু কাজ করা হবে।

পিডি/এমএআর/পিআর