ডায়াগনসিসে ৪০ ভাগ কমিশন, বিচ্ছিন্ন ঘটনা বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ডায়াগনোসিসে ৪০ ভাগ কমিশন চিকিৎসকরা নেন -এটা কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে ঘটতে পারে। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
রোববার (২৩ জুন) জাতীয় সংসদে এম আবদুল লতিফের (চট্টগ্রাম-১১) প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় প্রশ্নকর্তা জানতে চান, ‘মন্ত্রী মহোদয় অনুগ্রহ করিয়া বলবেন কি- ইহা সত্য কি না যে, ডায়াগনসিসের ৪০ ভাগ কমিশন নেন চিকিৎসক আর এ জন্য রোগীকে বাড়তি ফি দিতে হয়। জনস্বার্থে সরকার এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কি না?’
সম্প্রতি দুদকের এক প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতির নানা চিত্র তুলে ধরে তা প্রতিরোধে সাত দফা সুপারিশ করে অনুসন্ধান টিম। প্রতিবেদনে বলা হয়, ডায়াগনসিসে ৪০ ভাগ কমিশন নেন চিকিৎসক। চিকিৎসকের কাছে কোনো রোগী গেলে কারণে-অকারণে একগাদা পরীক্ষা ধরিয়ে দিয়ে সেখান থেকে তারা ওই কমিশন নেন।
সংসদে মো. মামুনুর রশীদ কিরণের অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যা রোধে সর্বোচ্চ দুই সন্তান গ্রহণ বাধ্যতামূলক করে আইন করার পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের নেই। তবে দেশের জনসংখ্যা সীমিত রাখার জন্য এবং পরিকল্পিত পরিবার গঠনে সর্বোচ্চ দুই সন্তান গ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেন, পরিকল্পিত পরিবার গঠন, জন্মবিরতিকরণ, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, নিরাপদ মাতৃত্ব, বাল্যবিবাহ বিরোধ, পুষ্টি, প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধ করার জন্য দেশব্যাপী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৫০টি ক্যাম্পেইন, ৫ হাজার টেলিভিশন চ্যানেল ও ৬ হাজার রেডিও বার্তা প্রচার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনামূলক ১৪০টি কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও বার্তা পৌঁছে দিতে সারাদেশে প্রতি মাসে ৩০ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিকের আয়োজন করা হচ্ছে এবং মাঠ পর্যায়ে ৪৫ হাজার পরিবার কল্যাণ সহকারীর প্রত্যেককে প্রতি মাসে একটি করে উঠান বৈঠক আয়োজন করে ছোট পরিবার গঠনে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
১৯৭০-৭৫ সাল পর্যন্ত প্রজনন হার ছিল ৬.৯১, যা বর্তমানে ২.০৫ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭৫ সালে পরিকল্পনা পদ্ধতির ব্যবহারের হার ছিল ৭.৭ শতাংশ, যা বর্তমানে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২.৪ শতাংশ। ২০২২ সালের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারের হার ৭৫ শতাংশ উন্নীত হবে।
মো. মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, চিকিৎসা শাস্ত্রে দেশের মেডিকেল কলেজে পাঠদানের জন্য শিক্ষক স্বল্পতা নিরসনে সরকারের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও লেকচারার পদে অনুমোদিত ৩৮২৯টি পদের বিপরীতে শূন্যপদ রয়েছে ১৭৭২টি, যা নিয়োগের কার্যক্রম চলমান, এটা দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
এইচএস/আরএস/পিআর