নগরজুড়ে তীব্র যানজট

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৮ পিএম, ২৩ জুন ২০১৯

ঈদের ছুটি শেষ হয়েছে দুই সপ্তাহ আগেই। নাড়ির টানে যারা বাড়ি গিয়েছিলেন তারাও ইতোমধ্যে ফিরেছেন ব্যস্ত নগরী ঢাকায়। ফলে সরব হয়েছে চিরচেনা শহর। কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে অফিসগুলোতে। খুলেছে স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ও। সঙ্গে রাস্তাঘাটেও বেড়েছে যানজট। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার সকাল থেকেই নগরজুড়ে তীব্র যানজট দেখা যায়।

ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে নগরীর বেশ কটি স্থানে পরীক্ষামূলক টাইমিং ট্রাফিক সিগন্যাল চালু করেছে ট্রাফিক বিভাগ। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সড়কের অলি-গলিতে নেতাকর্মীদের সমাগম। সঙ্গে নতুন করে ব্যস্ততম সড়ক বিজয় সরণি এলাকায়ও শুরু হয়েছে মেট্রোরেলের কাজ। যে কারণে আজ যানজট একটু বেশি ছিল।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বিজয় সরণি এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাদের ভিড়। ২-১ মিনিট পর পর একেকটি সিগন্যাল ছাড়া হচ্ছে। দ্রুত সিগন্যাল ছাড়া হলেও ফের অন্য সিগন্যালে বেড়ে যায় যানবাহনের চাপ।

JAM-(1).jpg

বিজয় সরণিতে কর্তব্যরত এক ট্রাফিক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের অধীনে ৭০টি সড়ক মোড়ে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল বাতি বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে বেশকিছু সিগন্যালে কাজ শেষে হয়েছে। আজ বিজয় সরণি মোড়ে সময় নির্ধারণ করে ডিজিটাল সিগন্যাল চালু করা হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে রাস্তায় চলমান গাড়ির সংখ্যার মিল না থাকায় যানজট বেড়ে যাচ্ছে। এটি পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। যানজট প্রকট হওয়ায় মাঝে মধ্যে ক্যাজুয়ালি সিগন্যাল ছাড়া হচ্ছে।

এদিকে যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কেউ কেউ ক্ষোভ ঝাড়েন। মনজুর হোসাইন নামে একজন ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ...(বেজন্মা) এক শহর। ৩ ঘণ্টায়ও যাত্রাবাড়ী থেকে বাসে বনানী যাওয়া যায় না।’

ফেরদৌস রহমান নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘ধানমন্ডি ৩২, রাসেল স্কয়ার দিয়ে যারা যাবেন সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিরা, মুড়ি, গুড়, পানি সম্ভব হলে কচি ডাব নিয়ে বের হয়েন। মাইকে ভাষণ আর ওই স্লোগান বিরক্তকর মনে হলে অবশ্যই হেডফোন কানে ঢুকানোর জন্য সাথে রাখতে ভুলবেন না। আর এ এলাকায় যথাসময়ে অফিসে ঢুকার দিবাস্বপ্ন না দেখাই মঙ্গল।’

JAM-(1).jpg

শেখ জাহাঙ্গীর আলম নামে এক গণমাধ্যমকর্মী জাগো নিউজকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় উত্তরা থেকে রওনা দিয়ে খামারবাড়ি মোড়ে আসতে লেগেছে দুপুর পৌনে ২টা। বনানী মহাখালী বিজয় সরণি মোড়ে তীব্র যানজট।’

মনির হোসেন নামে আরেক গণমাধ্যমকর্মী জানান, সকাল ১০টায় মোটরসাইকেলযোগে শনির আখড়া থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে আসার পথে তীব্র যানজটে পড়তে হয়। ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও যানজট নিরসন না হওয়ায় বাধ্য হয়ে পেছনে উল্টোপথে ফিরে অলিগলি পেরিয়ে আড়াই ঘণ্টা পর অফিসে প্রবেশ করার সুযোগ মেলে।

JAM-(1).jpg

যানজট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক পশ্চিম বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘আজ পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি জায়গায় ডিজিটাল সিগন্যাল সিস্টেম চালানো হয়েছে। সে কারণে কোনো সড়ক সুবিধা পেয়েছে কোনো সড়কে যানজট লেগেছে। পরীক্ষা করে টাইমিংটা আমরা ঠিক করব। সকালে ভিআইপি মুভমেন্ট ছিল। একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রোগ্রাম চলছে। এ ছাড়া মেট্রোরেলের নির্মাণকাজও চলছে। সব কিছুর মধ্যে আজ ঢাকায় ঈদ শেষে পরিবহন ও মানুষের পদচারণাও বেশি। সব মিলে চাপ তৈরি হয়েছে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘একটা ভালো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে গেলে শুরুতে তো কিছু বিড়ম্বনা থাকেই। যে কারণে যানজট তৈরি হযেছে শহরের বিভিন্ন স্থানে। আমরা রাজধানীতে ট্রাফিক শৃঙ্খলার লক্ষ্যে বেশকিছু স্থানে ডিজিটাল ট্রাফিক সিগন্যাল বসিয়েছি। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সড়কে চাপ বুঝে সিগন্যালের সময় নির্ধারণ করা হচ্ছে। হয়তো দ্রুতই আমরা এ নগরে ট্রাফিক ব্যবস্থার পরিবর্তন দেখতে পাব।’

জেইউ/এনডিএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।