অজ্ঞানপার্টির হাতিয়ার এবার হারবাল ওষুধ


প্রকাশিত: ০৪:২৩ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা এবার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে বিভিন্ন ধরনের হারবাল ওষুধ। টার্গেটকৃত ব্যক্তির কাছে এসব হারবাল ওষুধ বিক্রির অজুহাতে হাজির হয় অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা। তাদের কাছ থেকে হারবালের হালুয়া বা তরল জাতীয় কিছু খেলেই অজ্ঞান হয়ে যান ক্রেতারা। এরপর সর্বস্ব লুট করে পালিয়ে যায় অজ্ঞানপার্টি। মূলত ঈদ ও উৎসব মৌসুমকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকার আশপাশ এলাকা থেকে রাজধানীতে আসে এসব অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘অজ্ঞানপার্টির’ প্রতারক চক্রের ১৯ সদস্যকে আটকের পর এমন তথ্য দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে তিনজন এই চক্রের নেতা। তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ চেতনানাশক ও হারবাল ওষুধ জব্দ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, গত তিন মাসে অজ্ঞানপার্টির শতাধিক সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। ঈদকে তারা মৌসুম হিসেবে বেছে নিয়ে অপতৎপরতা চালায়।

সোমবার পল্টন এলাকা থেকে অজ্ঞানপার্টির সক্রিয় সদস্য আবদুর রাজ্জাক, পলাশ, আবদুল মান্নান, শাহিন, ফারুক চৌধুরী ওরফে মাসুম, ও সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে অভিযানের অংশ হিসেবে যাত্রাবাড়ি থানার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে মো. আবদুর রহমান শেখ, জাকির হোসেন, মানিক হোসেন, ওমর ফারুক, ইসমাইল হোসেন, জয়নাল আবেদীন ওরফে বাবুল খন্দকারকে গ্রেফতার করা হয়।

এরপর মগবাজার চৌরাস্তা হতে আব্বাস আলী, শহর আলী, আব্দুল মতিন ওরফে মতি, সুলতান শেখ, আবদুল খালেক, মাহিনুর এবং রাশিদুল ইসলাম ওরফে রিপনকে গ্রেফতার করা হয়। আটককৃতরা টঙ্গী-গাজীপুর, গাবতলী-সাভার, আশুলিয়া, চান্দুরা, মানিকগঞ্জ, যাত্রাবাড়ি, সায়েদাবাদ হতে মাগুরা চিটাগাং রোড, নারায়ণগঞ্জ রুটের বাসে ক্যানভাসার ও যাত্রী বেশে যাত্রীদের টার্গেট করে তাদের শিকারে পরিণত করে।

ওই প্রতারকরা কৌশলে মানুষকে বিভিন্ন খাবার খাইয়ে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়। অনেক সময় যাত্রীরা তাদের খাবার খেয়ে মারাও যায়। এখনো রাজধানীতে অজ্ঞানপার্টির ২০/২২ জন সদস্য কাজ করছে এবং আন্তঃজেলা অজ্ঞানপার্টির সদস্য ২০/২২ জন গ্রেফতার হননি। তবে পুলিশ তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারাদেশে এ ধরনের প্রতারক চক্রের তৎপরতা বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষের ভাষায় এরা ‘অজ্ঞানপার্টি’ হিসেবে পরিচিত। এদের খপ্পরে পড়ে চেতনানাশক ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। অনেকে আবার সর্বস্ব হারিয়ে দীর্ঘ মেয়াদি শারীরিক সমস্যায় ভুগেছেন।

তিনি আরো জানান, গত মাসের শেষ দিকে এরকম দুটি চক্রের ১২ সদস্য গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটি চক্রের সদস্যরা ঢাকা ও আশপাশের জেলায় বাসযাত্রীদের চেতনানাশক মেশানো আচার বা খাবার খাইয়ে সর্বস্ব লুটে নিতো।

আর অন্য চক্রের কয়েকজন সদস্য প্রতিবছর হজের সময় সৌদি আরবে লোক পাঠাতো পকেট মারার জন্য। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

জেইউ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।