বরিশালবাসীর জন্য সুখবর
ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমছে বরিশালের মানুষের। এখন থেকে এ বিভাগের মানুষ সকালে বরিশাল থেকে ঢাকায় গিয়ে কাজ শেষে সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফিরতে পারবেন। অথচ এর আগে বরিশাল থেকে ঢাকা যেতে সময় ব্যয় হতো প্রায় একদিন। এখন আর সেটি হবে না। কারণ এই রুটে যুক্ত হচ্ছে অত্যাধুনিক ছোঁয়া।
আর সেই ছোঁয়া হলো দ্রুত গতিসম্পন্ন দুটি জাহাজ। তাই এটি বরিশালবাসীর জন্য এরকমের সুখবর। সবচেয়ে খুশীর সংবাদ হলো জাহাজের সিটের নিচের অংশ স্টিল আর উপরের অংশ ফাইবারের তৈরি। যে কারণে এ জাহাজ ডুববে না । উল্টে গেলেও ভাসমানই থাকবে। এমনটাই দাবি গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষের।
শিগগিরই এই রুটে অত্যাধুনিক মানের এমভি গ্রিন লাইন-২ ও ৩ নামে দুটি জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে। আর সেই জাহাজে মাত্র ৫ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে বরিশাল ও বরিশাল থেকে ঢাকায় আসা যাওয়া করা যাবে। তবে এ দুটি জাহাজ চলাচল করবে শুধু দিনের বেলায়। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করবে জাহাজগুলো।
মঙ্গলবার দুপুরে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান সদরঘাট নৌ-টার্মিনালের পূর্ব পার্শ্বে নবনির্মিত লালকুটির টার্মিনালে জাহাজ দু’টির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, নতুন দুটি জাহাজে এ সার্ভিস চালু হলো যা বরিশালবাসীর জন্য এক সুখবর। বেসরকারিভাবে এই জাহাজ উপহার দেয়ার জন্য গ্রিন লাইন কোম্পানিকে ধন্যবাদ জানাই। বেসরকারিভাবে এই জাহাজ দুটি চালু করায় সরকারেরও একটি সাফল্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য সাগুপ্তা এমিলি, বরিশাল-৫ আসনের সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ, গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজ ও গ্রিন লাইন পরিবহনের স্বত্বাধিকারী মো. আলাউদ্দিন, বিআইডব্লিটিএ’র সদস্য ভোলানাথ দেসহ বিআইডব্লিউটিএ’র অন্যান্য কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জাহাজ দুটি চালু হলে বরিশাল অঞ্চলের মানুষ দিনের বেলায়ও যানজটমুক্ত পরিবেশে ঢাকায় যাওয়া-আসা করতে পারবেন। এজন্য লালকুটির ও বরিশাল ঘাটের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
প্রতিদিন ঢাকা থেকে সকাল সাড়ে ৭টা ও দুপুর ২টা এবং বরিশাল থেকে সকাল সাড়ে ৭টা ও দুপুর ২টায় জাহাজ দুটি ছাড়বে। ওয়াই-ফাই সুবিধা সম্বলিত জাহাজের টিকিট দেশের সব গ্রিন লাইন কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা যাবে। এছাড়া সদরঘাট ও বরিশালের বিশেষ টার্মিনাল থেকে অনলাইনেও টিকিট সংগ্রহ করা যাবে।
শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত ও আরামদায়ক উন্নতমানের ইকোনমি ও বিজনেস ক্লাস সিটের এই দুই ক্যাটাগরির আসন ব্যবস্থাও রয়েছে। ইকোনোমি ক্লাসের ভাড়া ৭০০ টাকা এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া ১০০০ টাকা। এ ভাড়ার মধ্যেই রয়েছে খাবারের আয়োজন।
বেসরকারিভাবে জাহাজ দুটি তৈরি করেছে গ্রিন লাইন ওয়াটার ওয়েজ ও গ্রিন লাইন পরিবহন কোম্পানি। দিবা সার্ভিসের জন্য যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে বে-ক্রুজ নামে দুটি জাহাজ এই রুটে ডে-সার্ভিস শুরু করলেও লঞ্চ মালিকদের ষড়যন্ত্রের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রায় ৬০০ যাত্রী বহনে সক্ষম এ জাহাজে একদিনের মধ্যেই বরিশাল থেকে ঢাকা গিয়ে আবার বরিশালে ফেরা সম্ভব বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে।
জানা গেছে, এমভি গ্রিন লাইন-২ ও এমভি গ্রিন লাইন-৩ এর নির্মাণ ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জাহাজ দুটি ক্যাটাম্যারান টাইপের ব্রিটিশ এয়ারলাইনসের বিমানের মতো
এমএএস/আরআইপি