বরগুনায় শিকলে বেঁধে কিশোর নির্যাতন


প্রকাশিত: ০৬:৫৪ এএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫

দোকানের ফাঁক দিয়ে উকি মারার অপরাধে বরগুনার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের লেমুয়া গ্রামে জোবায়ের নামের ১১ বছরের এক কিশোরকে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতিত জোবায়ের কদমতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শেণির শিক্ষার্থী।

তার বাবা আ. সালাম মুন্সী একজন দরিদ্র দিনমজুর। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় জোবায়েরকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় অধিবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার বিকেলে স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে প্রচণ্ড বৃষ্টি শুরু হলে স্থানীয় একটি মুদির দোকানে আশ্রয় নেয় জোবায়ের। এ সময় দোকানের মধ্যে কেউ আছে কিনা তা দেখার জন্য একটি ফাঁকা দিয়ে দোকানের মধ্যে উঁকি দেয় জোবায়ের।

এই খবর শুনে দোকানের মালিক এমাদুল জোবায়েরকে তাদের ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে নির্যাতন শুরু করে। কিল ঘুষি এবং এলোপাথারি লাথি মেরে দাঁত ভেঙে দেয়া হয়। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে তাল গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে বেঁধে, আবার কখনো কাদার মধ্যে চেপে ধরে দীর্ঘ দুই ঘণ্টাব্যাপি জোবায়েরের ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় এমাদুল।

নির্যাতনের এক পর্যায়ে বৃষ্টির মধ্যেই মাটিতে চিৎ করে শুইয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে বলা হয় জোবায়েরকে। চোখ বন্ধ করলেই চলে নির্যাতন। এ সময় জোবায়েরের দরিদ্র বাবা-মা ছেলেকে ছাড়িয়ে আনতে গেলে তাদের সামনেই চলে নির্যাতন। পরে স্থানীয় অধিবাসীদের সহযোগিতায় দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পরে জোবায়েরকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

Barguna

জোবায়েরের মা কাজল বেগম (২৮) জাগো নিউজকে বলেন, তার ছেলে কদমতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। জোবায়েরের অবস্থা এখন কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাথির আঘাতে তার সামনের দুঁটো দাত আলগা হয়ে গেছে। তাছাড়া হাতের কনুই নাড়াতে পারছে না জোবায়ের। ডাক্তার এক্সরে করতে বলেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে তার।

জোবায়েরের বাবা আব্দুস সালাম জাগো নিউজকে জানান, তারা তাদের ছেলে জোবায়েরের চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত রয়েছেন। অন্যদিকে থানায় কোনো ধরনের অভিযোগ না করার জন্য নির্যাতনকারীদের পক্ষ থেকে তাদের ফোন করে হুমকি দেয়া হচ্ছে।  

আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর নুরুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। অসুস্থ জোবায়েরের যথাযথ চিকিৎসার জন্য তিনি জেনারেল হাসাপাতালের ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

বরগুনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ হোসেন পিপিএম জাগো নিউজকে জানান, কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলেও তথ্য পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে যাথযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

এসএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।