তিস্তার পানি নিয়ে বেশি চিন্তার দরকার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩৫ পিএম, ০৯ জুন ২০১৯

‘কারও কাছে পানির জন্য মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না’ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেশি পানি হলে তারা (ভারত) কী করবে? এটা নিয়ে বেশি চিন্তা করার দরকার নেই।

রোববার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সদ্য সমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারতের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যুর সমাধানে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘মোদি সাহেব আবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন, তাকে অভিনন্দন জানাই। আমরা আশা করি আমাদের সমস্যাগুলো একে একে সমাধান হবে।

তিনি বলেন, ‘শুধু তিস্তা তিস্তা করে না। আপনারা একটা জিনিস ভুলে যাচ্ছেন, আমাদের মেরিটাইম বাউন্ডারির মতো কঠিন একটা সমস্যা আমরা সমাধান করেছি। আমরা ছিটমহল বিনিময় করেছি। পৃথিবীর বহু দেশে যুদ্ধ বেধে যাচ্ছে এই ছিটমহল বিনিময় নিয়ে। আমরা একটা উৎসবমুখর পরিবেশে ছিটমহল বিনিময় করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা অনেক কঠিন সমস্যার সমাধান করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারও কাছে পানির জন্য মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। কারণ আমাদের এটা হচ্ছে ডেল্টা। হিমালয় থেকে নদীগুলো যা আসছে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যেতেই হবে। পানিটা আমরা কতটা ধরে রাখতে পারব সেই ব্যবস্থা যদি আমরা করি তাহলে পানি পানি করে আমাদের চাইতে হবে না। আমরা নিজেরাই ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারব। আমরা তাই করব।’

ভারতের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘চাইলাম পানি (ভারত) দিল বিদ্যুৎ। তো বিদ্যুৎ নিচ্ছি। পানি তো পাওয়াই যায় বৃষ্টি হলে। প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা ভারত থেকে আমদানি করছি। আরও কিছু আনার জন্য আলোচনা চলছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বিদ্যুৎ এখন যথেষ্ট স্বয়ংসম্পূর্ণ। আরও বেশি আছে। প্রায় ৯৩ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। যে প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে শেষ হলে ২০২১ সালের মধ্যে প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা আলো জ্বালতে পারব। ২০২৪ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা উৎপাদন করতে পারব। এখন আমরা ২০ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমরা উৎপাদন করতে পারি। এটা মেশিনের ব্যাপার আপনারা জানেন। কিছু চলতে থাকে, কিছু আবার মেরামত হতে থাকে। কিন্তু আমাদের কাছে সব সময় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ আছে।’

সদ্যসমাপ্ত ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার বিকেল ৫টার পর প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে জাপান, সৌদি আরব এবং ফিনল্যান্ড সফরসহ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

এর আগে ত্রিদেশীয় সফর শেষে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

কাতার এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ফিনল্যান্ড সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীদের নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে হেলসিংকি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

বিমানটি স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে কাতারের দোহা হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ফিনল্যান্ডে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ জুন ফিনিস প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তোর সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন এবং ৫ জুন অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ ও ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবর্ধনায় যোগ দেন।

সৌদি আরবে তিনদিনের সফর শেষে শেখ হাসিনা গত ৩ জুন ত্রিদেশীয় সফরের দ্বিতীয় গন্তব্য জেদ্দা থেকে ফিনল্যান্ডের হেলসিংকি পৌঁছান।

সৌদি আরবে তিনদিনের সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বাদশাহর আমন্ত্রণে মক্কায় অনুষ্ঠিত ১৪তম ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন। এ ছাড়া তিনি মক্কায় পবিত্র ওমরাহ পালন এবং মদিনায় প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) রওজা জিয়ারত করেন।

প্রধানমন্ত্রী গত ২৮ মে ত্রিদেশীয় সফরের প্রথম গন্তব্য জাপানের রাজধানী টোকিও যান। জাপানে চারদিন অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে আড়াই বিলিয়ন ডলারের দ্বিপক্ষীয় চুক্তিসহ ৪০টি ওডিএ চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ‘ফিউচার ফর এশিয়া’ বিষয়ক নিক্কেই সম্মেলনেও যোগ দেন। ওই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সফরে তিনি জাপানের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গেও গোলটেবিল বৈঠক করেন।

এইউএ/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।