চিড়িয়াখানায় রেকর্ডসংখ্যক লোকসমাগম

মুহাম্মদ ফজলুল হক
মুহাম্মদ ফজলুল হক মুহাম্মদ ফজলুল হক , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ০৬ জুন ২০১৯

বছরজুড়ে রাজধানীর মানুষজন থাকে কর্মব্যস্ততা আর ছোটাছুটিতে। বছরে দু’বার ঈদের সময় নাড়ির টানে ঢাকা ছাড়ার পর শহর অনেকটা জনশূন্য হয়ে পড়ে। তখন জনমানব শূন্য এ ঢাকা শহরকে মনে হয় এক ফাঁকা জনপদ। রাজপথে জনসমাগম কম থাকায় সুনসান নীরবতা বিরোজ করে। নীরব ঢাকার সেই নীরবতা কিছুটা ভাঙে আবার ঈদ বিনোদনে।

বৃহস্পতিবার যেমনটা দেখা গেল চিড়িয়াখানায়। ঈদের পরের দিন সকাল আটটা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে বলে জাগো নিউজকে জানায় কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে চিড়িয়াখানার তথ্য কর্মকর্তা ড. মো. ওয়ালিউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদকে কেন্দ্র করে চিড়িয়াখানায় নানা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রাণির প্রজনন হয়েছে। সিসিটিভিসহ চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বিনোদনে ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেমসহ দর্শনাথীদের বাড়তি সুবিধা দিতে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে জাতীয় চিড়িয়াখানাকে।’

দর্শনার্থীদের বাড়তি সুবিধা দিতে এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঈদের দিন দর্শনার্থী কিছুটা কম থাকলেও আজ লক্ষাধিক দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় আসতে পারে।’

Zoo-Dhaka

আজ হাজার হাজার দর্শকের চাপে মুখরিত চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণ। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামীকাল ও পরশু দর্শনার্থীর সংখ্যা এ রকম থাকবে বলে আশা করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চিড়িয়াখানায় হাজার দর্শনার্থীদের ভিড়ে ছোট-বড় সব বয়সী মানুষকেই দেখা গেছে। চিড়িয়াখানার নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সুফিয়ান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদকে সামনে রেখে নানা আয়োজনে সাজানো হয়েছে চিড়িয়াখানা। জিরাফ, চিত্রা হরিণ, জলহস্তী, রেসার বানরসহ অনেক প্রাণির প্রজনন (বাচ্চা) হয়েছে।’

দর্শনার্থীদের সুবিধায় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে ১৫টি মনিটরিং সাব-কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের প্রবেশে রয়েছে ১৪টি টিকিট কাউন্টার। দুই বছরের বেশি বয়সী প্রত্যেককে ৩০ টাকার টিকিট কেটে চিড়িয়াখানায় ঢুকতে হয়। টিকিট নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হচ্ছে না

Zoo-Dhaka

চিড়িয়াখানায় পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন কল্যাণপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা না থাকলেও পরিবার নিয়ে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এলাম। ঈদের দিন বৃষ্টির কারণে কোথাও বের হতে পারিনি। আজ মানুষের চাপে পাগল হওয়ার অবস্থা।’

তবে বিনোদনের ক্ষেত্রে চিড়িয়াখানায় বাড়তি কোনো প্রস্তুতি চোখে না পড়েনি উল্লেখ করে পোশাক শ্রমিক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘এখানে বিনোদনের কোনো ব্যবস্থা না থাকলেও সময় কটছিল না, তাই বন্ধু, পরিজনদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছি।’

যাত্রাবাড়ী থেকে আসা লায়লা ও তার পরিবারের সদস্যরা চিড়িয়াখানায় প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঈদে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছেন। তারা জানালেন, পশু-পাখি দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। তাই বার বার এখানে ছুটে আসেন। ঈদের পরের দিন কোথাও বেড়াতে না গিয়ে পরিবারের কয়েকজন মিলে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছেন তারা।

জাতীয় চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ড. মো. নূরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‌গত বছর ঈদে চিড়িয়াখানায় দেড় লাখ লোকের সমাগম হয়। এবার তা দুই লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি। তিনি আরও বলেন, ‌দর্শনার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে চিড়িয়াখানায় ঘোরাঘুরি করতে পারেন এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা না ঘটে সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এফএইচ/এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।