ভবিষ্যতের জঙ্গি রোহিঙ্গারা : শাহরিয়ার কবির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫২ পিএম, ২৬ মে ২০১৯

রোহিঙ্গারাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশে জঙ্গি-মৌলবাদী সন্ত্রাসের অন্যতম উৎস হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শিবিরে এ পর্যন্ত ৩৯টি জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।

রোববার (২৬ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশে আইএসের নতুন হুমকি ও কার্যক্রম: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ আশংকা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ওয়াজ বা খুতবায় যারা ভিন্ন সম্প্রদায়, ভিন্নমত, ভিন্ন ধর্ম ও ভিন্ন জীবনধারায় বিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করে তাদের প্রতিহত করতে হবে।

মাদরাসা শিক্ষাকে মানবিক ও যুগোপযোগী করাসহ সব শিক্ষা মাধ্যমে বাঙালির ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে জঙ্গি দমনে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতি ৭টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন শাহরিয়ার কবির।

প্রস্তাবনাগুলোর উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- সংবিধানের ৩৮ ধারা অনুযায়ী ধর্মের নামে রাজনীতি অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা, ওয়াজ ও খুতবার নামে যারা শান্তি ও সহমর্মিতার ধর্ম ইসলামকে অসহিষ্ণুতা, ঘৃণা ও সন্ত্রাসের সমার্থক বানাবার অপচেষ্টায় লিপ্ত, সেসব ব্যক্তিকে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিচার ও শাস্তির আওতায় আনা, ফেসবুক ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বসে অবিলম্বে সকল ঘৃণা-বিদ্বেষ ও উন্মদনা সৃষ্টিকারী প্রচারণা বন্ধ করা এবং প্রচারকদের শাস্তির আওতায় আনা।

লিখিত বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহুল আলোচিত সন্ত্রাসী সংগঠন 'আইএস' ও 'আল কায়েদা' ইরাক ও সিরিয়ায় জিহাদ করতে গিয়ে পর্যুদস্ত হয়ে ২০১৭ সালেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তাদের পরবর্তী তৎপরতার কেন্দ্র হবে আরব মানচিত্রের হিন্দুস্তান⎯ এখনকার পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা।

তিনি বলেন, ২০১৬ সাল থেকে তারা হাদিসের কিছু উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে, কেয়ামতের আগে শেষ জিহাদ হবে হিন্দুস্তানের জমিনে। যেটি তাদের ভাষায় 'গাজওয়ায়ে হিন্দ’।

তিনি আরও বলেন, এর প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হবে, প্রতিপক্ষকে কীভাবে ধ্বংস করতে হবে তার উল্লেখ আইএস ও আল কায়েদার প্রকাশনাসমূহ এবং তাদের নেতৃবৃন্দসহ এ দেশীয় সহযোগীদের বিভিন্ন ওয়াজ ও জলসার বক্তৃতায় আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিসানে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী জঙ্গি দমনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য প্রদর্শন করেছে। তারা গত কয়েক বছরে জঙ্গিদের বহু আস্তানা ধ্বংসসহ তাদের বহু হামলার চক্রান্ত ও উদ্যোগ নস্যাৎ করে দিয়েছে। অনেক জঙ্গি ক্রসফায়ারে নিহত এবং অনেকে গ্রেফতার হয়েছে। জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাসের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'শূন্য সহিষ্ণুতা'র ঘোষণা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রশংসিত হয়েছে।

তবে এ কথা আমরা বার বার বলছি⎯ জঙ্গিদমনই যথেষ্ট নয়, জঙ্গিদের আদর্শ ও রাজনীতি⎯ যাকে আমরা 'মওদুদিবাদ' ও 'ওয়াহাবিবাদ' বলি, তাকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে নির্মূলের কোনো সমন্বিত কার্যক্রম দেখছি না।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সহ-সভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদজায়া সালমা হক এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেইউ/এমএমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।