রেলের টিকিট চুরি, বলতে গেলে শিনাজুরি!

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৯:০২ পিএম, ২৫ মে ২০১৯
নিজ দফতরের সামনে স্টেশন ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ তেড়ে যান চট্টগ্রাম মহানগর কৃষক লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনের দিকে

জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে রেলের টিকিট দেয়ার ব্যবস্থা হওয়ায় অনেকের আশা ছিল, এবার হয়তো কালোবাজারি বন্ধ হবে। কিন্তু চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনি। রেলের টিকিট কালোবাজারি সমান তালেই চলছে। শনিবার দুপুরে সেই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন মাস্টারের হাতে লাঞ্ছিত হন বেশ কয়েকজন টিকিটপ্রত্যাশী।

অনলাইনে টিকিট না পেয়ে প্রথম থেকেই রেলস্টেশনের কাউন্টারে বাড়তি চাপ দেখা দিয়েছে। যেখানে সারা রাত অপেক্ষা করে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে স্টেশনের বাইরে বাড়তি অর্থ দিলেই মিলছে পছন্দের আসনের দুর্লভ টিকিট! এভাবে টিকিট বিক্রি করার সময় শুক্রবার (২৪ মে) ভোরে চট্টগ্রাম থেকে রুস্তম আলী ওরফে জাহাঙ্গীর নামে এক ব্যক্তিকে ৬১ আসনের ৫০টি টিকিটসহ গ্রেফতার করে পুলিশ।

অভিযোগ আছে, চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের বুকিং ক্লার্ক এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কিছু সদস্য টিকিট কালোবাজারিতে সক্রিয়। এদের হাত ধরেই কালোবাজারিদের কাছে ট্রেনের টিকিট যাচ্ছে। কিন্তু চট্টগ্রাম রেলস্টেশন মাস্টার আবুল কালাম আজাদের দাবি, নগরে কোনো ধরনের টিকিট কালোবাজারি হচ্ছে না।

আজ (শনিবার) দুপুরে কয়েকজন টিকিটপ্রত্যাশী সারা রাত অপেক্ষায় থেকে দুপুর পর্যন্ত টিকিট না পাওয়ায় স্টেশন ম্যানেজারের দফতরে অভিযোগ জানাতে আসেন। কিন্তু এর কোনো সমাধান না দিয়ে উল্টো বিতণ্ডায় জড়ান স্টেশন ম্যানেজার। এমনকি ঘটনাস্থলে উপস্থিত চট্টগ্রাম মহানগর কৃষক লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনের সঙ্গেও তার কথাকাটাকাটি হয়।

chittagong-stetion

আরও পড়ুন> ৮শ’ টাকার ভাড়া ১৩৫০ টাকা!

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নাজমা আক্তার নাজু নামে এক নারী টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ জানাতে গেলে, স্টেশন ম্যানেজার তার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনা দেখে আলমগীর হোসেন স্টেশন ম্যানেজারকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা সব টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করে দেন। অথচ সারা রাত লাইনে থেকেও মানুষ টিকিট পায় না। আপনারা পাবলিক সার্ভেন্ট। আমাদের রক্তের টাকায় আপনাদের বেতন হয়। এই অধিকার আপনাদের কে দিয়েছে?’

এ সময় ক্ষুব্ধ স্টেশন ম্যানেজার বলেন, ‘আমরাও ঘাম ঝরিয়ে পরিশ্রম করে বেতন পাই। সীমিত টিকিট বিক্রি হয়ে গেলে আমাদের কী করার আছে? রেলওয়ে, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাই রাতদিন কাজ করছে। আর আপনারা তো উল্টো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করছেন।’

এ সময় স্টেশন ম্যানেজারের সঙ্গে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকজন সদস্যও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে পরিস্থিতি দেখে স্থান ত্যাগ করেন চট্টগ্রাম মহানগর কৃষক লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, অভিযোগ করতে এসে অনেকেই অশোভন আচরণ করে। প্রায়ই এসব আচরণের মুখোমুখি হতে হয় টিকিটপ্রত্যাশীদের।

আবু আজাদ/এমএসএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।