২০ রোজার মধ্যে বোনাস-বেতন না হলে কঠোর কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:৫১ পিএম, ২৪ মে ২০১৯

২০ রোজার মধ্যে বেসিকের সমপরিমাণ ঈদবোনাস ও মে মাসের মজুরিসহ সব বকেয়া দেয়ার দাবি জানিয়েছেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা। এ সময়ের মধ্যে এই দাবি পূরণ না হলে শিল্পাঞ্চলগুলোতে কঠোর কর্মসূচি দেয়া বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শ্রমিকদের বেতন-বোনাসের দাবিতে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়।

আরও পড়ুন>> বোনাস ৩০ মে, বেতন ২ জুনের আগে দেয়ার আহ্বান প্রতিমন্ত্রীর

সমাবেশে নেতারা বলেন, বেসিকের সমান বোনাসের দাবি অন্যান্য বছরের মতো এবারও যাতে সর্বত্র উপেক্ষিত না হয়।

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শ্রমিকনেতা অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ বলেন, দেশে সবচেয়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন গার্মেন্ট মালিকরা, কিন্তু শ্রমিকদের পাওনার কথা আসলে তারাই সবচেয়ে বিত্তহীন হয়ে যান। অথচ মালিকরা ঈদ উপলক্ষে কানাডা-আমেরিকা-মালয়েশিয়ায় পারি জমান কেনা-কাটা ও ঈদ উদযাপনের জন্য। প্রতি বছর ঈদ উৎসবের সময় গার্মেন্ট শ্রমিকরা উৎসব বোনাস থেকে বঞ্চিত হয়।

তিনি বলেন, ২০ রোজার মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধ করা না হলে ঈদের আগে শ্রমিকদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেয়া হবে। সংকট নিরসনে সরকারি সংস্থাগুলোর নির্বিকার ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

আরও পড়ুন>> পাঁচ মাস ধরে বেতন না পেয়ে কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ

আগামী জাতীয় বাজেটে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আবাসান, রেশনিং ও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের দাবি জানিয়ে এই শ্রমিকনেতা বলেন, যে শ্রমিকদের শ্রমে আর অবদানে দেশের অর্থনীতি সচল আছে তাদের জন্য আজ পর্যন্ত কোনোদিন পৃথক বরাদ্দ দেয়া হয়নি। অথচ মালিকরা কর রেয়াত, শুল্ক অবকাশসহ সব প্রণোদনা ভোগ করেন।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, ‘কিছু কারখানায় বোনাস দেয়া হলেও তা নামমাত্র, কখনও কখনও দান-খয়রাতের মতো বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। দেশে জনপ্রশাসন ও সেবা খাতে এবং সরকারি-বেসরকারি নির্বিশেষে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী মূল মজুরির সমান উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন। অথচ সিংহভাগ রফতানি আয়ের কারিগর, সর্ববৃহৎ উৎপাদন খাত গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকরা বরাবরই বঞ্চিত।’

আরও পড়ুন>> শ্রমিকদের বেতন-বোনাস যথাসময়ে দিতে হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

তিনি বলেন, গাজীপুরের ইন্ট্রামেক্স, ওয়ার্কফিল্ড, নারায়ণগঞ্জে এ আর জেড, কুমিল্লায় আসিফ গার্মেন্ট ও সিডি এক্রোলিক, রামপুরায় ড্রাগন সোয়েটার, নন্দীপাড়ায় সিসিলি, উত্তরায় অনলি ওয়ান ফ্যাশন, ম্যাডলেফ এপারেলস, পলমল গার্মেন্ট, টিআরজেড, রেভেনট্রেক, টপ জিন্স, ব্লু ঈগল, সুপারটেক্স এবং আশুলিয়ায় স্প্রিং সোয়েটার, সেঞ্চুরি গার্মেন্ট, ডং লেয়ার, পিএমএফ, মদিনা প্যাল ফ্যাশন কারখানাসহ কয়েকশ কারখানায় ইতোমধ্যে নতুন মজুরি কাঠামো বাস্তবায়ন না করা ও কয়েক মাসের বকেয়া মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে।

২০ রমজানের মধ্যে বেসিকের সমান ঈদবোনাস ও মে মাসের সম্পূর্ণ মজুরিসহ সব বকেয়া পরিশোধ না হলে শিল্পাঞ্চলগুলোতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আরও পড়ুন>> মালিকরা শপিংয়ে, শ্রমিকরা রাস্তায়

গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শ্রমিকনেতা অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে এবং শ্রমিকনেতা এমএ শাহীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার, কার্যকরি সভাপতি কাজী রুহুল আমীন, কেন্দ্রীয় নেতা সাদেকুর রহমান শামীম, দুলাল সাহা, দিলীপ নাথ, জালাল হাওলাদার, কে এম মিন্টু, মঞ্জুর মঈন, জয়নাল আবেদীন, কালিয়াকৈর আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম, রানা প্লাজা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমদাদুল ইসলাম, কারখানা শ্রমিক রীনা আক্তার, বাবুল হোসেন, মালেকা বেগম, শামীম আহমেদ প্রমুখ।

এইউএ/জেডএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।