জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি


প্রকাশিত: ১০:৩১ এএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জামালপুরের চার উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন বন্যা প্লাবিত হয়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

দুর্গত এলাকায় তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানিসহ খাবারের তীব্র সঙ্কট। টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রোববার দুপুরে বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি বেড়ে বিপদসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

যমুনার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইসলামপুরের কুলকান্দি, পার্থশী, চিনাডুলি, নোয়ারপাড়া, সাপধরী, বেলগাছা, চরপুঠিমারী, গোয়ালেরচর, দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ, চিকাজানি, চুকাইবাড়ি, মেলান্দহের কুলিয়া, মাহমুদপুর এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা, পিংনা, সাতপোয়া ও পোঘলদিঘা  ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় বন্যা কবলিত মানুষরা আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন বাঁধ আর উঁচু সড়কে।

চারদিকে পানি উঠে পড়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে বন্যা কবলিতরা, দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানিসহ দেখা দিয়েছে তীব্র খাদ্য সঙ্কট। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুরও খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

বন্যা কবলিতরা চলাচল করছে নৌকা কিংবা কলা গাছের ভেলায়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অপরদিকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি উঠে পড়ায় ব্যহত হচ্ছে পাঠ্য কার্যক্রম।

পুরোপুরি পানি উঠে পড়ায় ইতোমধ্যেই জেলার প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্যার পানিতে মেলান্দহ-মাহমুদপুর-মাদারগঞ্জ সড়কের তিনটি ড্রাইভেশন তলিয়ে যাওয়ায় এই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। পানির তীব্র স্রোতে মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর-ইসলামপুর সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

এদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার ১২ হাজার ৯৬৩ হেক্টর জমির ফসল। এরমধ্যে ১২ হাজার ২৬০ হেক্টর রোপা আমন, ১০৩ হেক্টর রোপা আমন বীজতলা, ৫৮০ হেক্টর সবজি ক্ষেত এবং ২০ হেক্টর জমির আউশ ধান।

দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানিতে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় সম্পূর্ণরূপে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষক। তাই ত্রাণের পরিবর্তে বিন্যামূল্যে বীজ দাবি করেছে বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকরা।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. শাহাবুদ্দিন খান জানিয়েছেন, বন্যা দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ৫ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা ও ১৭৩ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

শুভ্র মেহেদী/এমজেড

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।