নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে


প্রকাশিত: ১০:০২ এএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার। ইতোমধ্যে নৌবাহিনীকে নতুন নতুন যুদ্ধ জাহাজসহ অত্যাধুনিক জলযান দিয়ে এবং নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখে সুসজ্জিত বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমাদের সমুদ্র সীমা জয়ের পর বিশাল অংশের সমুদ্র সম্পদ রক্ষা, আহরণ, চোরাচালান রোধ ও সমুদ্র সীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নৌবাহিনীকে ঢেলে সাজানোর কাজ অব্যাহত রয়েছে।

রোববার দুপুরে বাগেরহাটের দ্বিগরাজে `বিএনএস মংলা` নৌঘাঁটিতে নৌবাহিনীর তিনটি নতুন জাহাজের কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রসীমা নির্ধারণে সহায়তার জন্য অত্যাধুনিক সার্ভে জাহাজ বানৌজা অনুসন্ধান নৌবহরে সংযোজন করা হয়। এরপর মেরিটাইম হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফট সংযোজন নৌবাহিনীতে নতুন মাত্রা যোগ করে। একে একে নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে দুইটি মিসাইল ফ্রিগেট, একটি আমেরিকায় তৈরি ফ্রিগেট, দুটি মিসাইল করভেট ও খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি পাঁচটি পেট্রল ক্রাফট। দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকায় টহল ও পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা বর্তমানে বহুগুণে বেড়ে গেছে। যা আমাদের সমুদ্রসীমা ও সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আমেরিকায় তৈরি আরো একটি ফ্রিগেট বানৌজা সমুদ্র অভিযান ও চীনে নির্মাণাধীন অত্যাধুনিক দুইটি করভেট বানৌজা প্রত্যয় এবং স্বাধীনতা এ বছরেই নৌবহরে সংযোজিত হবে। এই সরকারের আমলেই আনকনভেনশনাল ওয়ারফেয়ারের জন্য সংযোজিত হয়েছে স্পেশাল ফোর্স `সোয়াডস্`। সর্বশেষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দুইটি সাবমেরিন সংযোজনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে, যা ২০১৬ সালের মাঝামাঝি নৌবাহিনীতে সংযোজিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আজ দেশের শিপইয়ার্ডে দেশিয় ও বৈদেশিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নির্মিত দেশের সর্বপ্রথম ফ্লিট ট্যাংকার নৌবাহিনীতে সংযোজিত হলো। দেশের জাহাজ তৈরি শিল্পের ইতিহাসে এটি এক বিশাল মাইলফলক। দেশিয় শিপইয়ার্ডগুলোর এ অগ্রযাত্রা ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে একটি জাহাজ নির্মাণকারী দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছে। অদূর ভবিষ্যতে আমরা এদেশেই আরো উন্নতমানের যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করতে সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ।

দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার ডাকে সাড়া দিয়ে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সশস্ত্র বাহিনীসহ দেশের আপামর জনসাধারণ।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০১০ সাল থেকে লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বানৌজা ওসমান ও মধুমতি মোতায়েন হয়েছিল। বর্তমানে সেখানে বানৌজা আলী হায়দার ও বানৌজা নির্মূল মোতায়েন রয়েছে। একইভাবে মালি ও দক্ষিণ সুদানে পূর্ণাঙ্গ নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্টসমূহ শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েন করা হয়েছে।

এর আগে সকাল ১১টায় হেলিকপ্টার যোগে প্রধানমন্ত্রী মংলা নৌঘাঁটিতে এসে পৌঁছান। এরপর প্রধানমন্ত্রী সেখানে ও তেলবাহী জাহাজ বানৌজা খানজাহান আলী, বানৌজা সন্দীপ এবং বানৌজা হাতিয়ার কমিশনিং (সংযুক্তিকরণ) অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ সময় নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব উপস্থিত ছিলেন।

শওকত আলী বাবু/এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।