‘সৌভাগ্যবানদের জন্য ১৪ আইটেম আর হতভাগ্যদের জন্য ১১’
ইফতার অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে ভালো ভালো ও বেশি আইটেমের খাবার খেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাসহ অন্যান্য কমিশনাররা। এছাড়া সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও বড় বড় কর্মকর্তারা ভালো ভালো খাবার খেলেও তাদের অধীনস্ত সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেয়া হয়েছে ভিন্ন খাবার। অথচ মঙ্গলবার একই ছাদের নিচে ইফতার করেছেন তারা। এ নিয়ে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এই ইফতারের আয়োজন করা হয় নির্বাচন ভবনের ফোয়ারা চত্বরে। সেখানে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন সাবেক অনেক নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তা। আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাবপ্রধান বেনজীর আহমদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ অনেকে। তাদের সবাইকে নিয়ে ইসির কর্মকর্তারা ভালো ভালো খাবার খেলেও অন্যদের ভাগ্যে তা জোটেনি। তারা খেয়েছেন ১৪ ধরনের আইটেম। আর অন্যদের জন্য বরাদ্দ ছিল ১১ ধরনের আইটেম।
খাবারের তালিকা থেকে জানা যায়, কমিশনারদের চোখে ‘সাধারণ’ মানুষদের জন্য ট্যাং-এর শরবত বরাদ্দ থাকলেও তারা সেই শরবতের পাশাপাশি খেয়েছেন পোস্তা বাদামের শরবত। বাড়তি হিসেবে ছিল লাল আঙুর আর চিকেন ভুনা। কিন্তু সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এসব খাবার পাননি। ভিন্ন মেনুতে তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল ট্যাং-এর শরবত আর মাটন তেহারির প্যাকেট।
সেই ইফতার পার্টিতে অংশ নেয়া একযুগেরও বেশি সময় ধরে নির্বাচন কমিশনের বিট করা কাজী হাফিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই এমনটা সম্ভব। পবিত্র রমজানের ইফতার অনুষ্ঠানে এক ছাদের নিচে বসে আজ সাধারণ খাবারের অতিরিক্ত হিসেবে নিজেরা খেলেন পোস্তা বাদামের শরবত, লাল আঙুর আর চিকেন ভুনা। কমিশন সচিবালয়ের উঁচুপদের কর্মকর্তারাও এই বিশেষ ভোগ থেকে বঞ্চিত হননি। কিন্তু সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারী আর সাংবাদিকরা এসব খাবার পেলেন না। ভিন্ন মেনুতে তাদের জন্য বরাদ্দ ট্যাং-এর শরবত আর মাটন তেহারির প্যাকেট। নির্বাচন কমিশনার আর কমিশনের উঁচুপদের কর্মকর্তাদের মেনুর সাথে সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাংবাদিকদের মেনুটা পড়লেই বৈষম্যটি বুঝতে পারবেন। সৌভাগ্যবানদের জন্য ১৪টি আইটেম আর হতভাগ্যদের জন্য ১১টি।’
তার এই স্ট্যাটাসের পর একাধিক মন্তব্য পড়েছে। মশিউর খান নামে একজন লিখেছেন, ‘ধর্ম পালনেও বৈষম্য? এরই নাম ইসি (ছি: ছি:)।’
মাহবুব জুয়েল লিখেছেন, ইফতার নিয়েও তারা এমন অবিবেচকের মতো কাজ কীভাবে করলো!!
এ বিষয়ে জানার জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবের নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে নির্বাচন কমিশনার ও বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক মাহবুব তালুকদার জাগো নিউজকে বলেন, এই ধরনের বৈষম্যের কথা আমার জানা নেই। আর আমি জানতামও না কার কার কী কী ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ধরনের বৈষম্য হয়ে থাকলে সত্যিই তা দুঃখজনক।
এইচএস/বিএ