বালিশ দুর্নীতির তদন্তে রূপপুর যাবে আইএমইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:০৫ পিএম, ২১ মে ২০১৯

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় গ্রিন সিটিতে নির্মাণাধীন ভবনের আসবাবপত্র ও বালিশ কেনাসহ অন্যান্য কাজের অস্বাভাবিক খরচ তদন্ত করবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মূল্যায়ন পরিবীক্ষণ ও বাস্তবায়ন বিভাগ (আইএমইডি)।

মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে এনইসির সভা শেষে এ তথ্য জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এর আগে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভা হয়। সেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার ব্যয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দেয়া হয়।

আরও পড়ুন>> বালিশ-কেটলি ওঠানোর খরচ শুনে হাসলেন বিচারপতিরা

এডিপির আকার তুলে ধরার সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে এ বিষয়ে দুটি কমিটি হয়েছে। তারপরও আমার আইএমইডি যেহেতু আছে, আমার দায়িত্বও আছে। আমি আইএমইডিকে নির্দেশ দেব, তারা তাদের পক্ষ থেকে আমাকে একটা ফিডব্যাক দেবেন। এই ফিডব্যাক পাওয়ার পরে আমি সে তথ্য প্রধানমন্ত্রী বা ওই মন্ত্রণালয়কে জানাব।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এনইসি সভায় রূপপুরের দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

ওই দুর্নীতির তদন্তের জন্য গত ১৯ মে দুটি কমিটি গঠন করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

গ্রিন সিটিতে আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র ক্রয়ে লাগামছাড়া দুর্নীতির তথ্য সম্প্রতি ফাঁস হয়। এতে দেখা যায়, একটি বালিশের পেছনে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৬ হাজার ৭১৭ টাকা। এর মধ্যে এর দাম বাবদ ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা আর সেই বালিশ নিচ থেকে ফ্ল্যাটে ওঠাতে খরচ ৭৬০ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারি টাকায় আকাশ সমান দামে এসব আসবাবপত্র কেনার পর তা ভবনের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে তুলতে অস্বাভাবিক হারে অর্থ ব্যয়ের এ ঘটনা ঘটিয়েছেন গণপূর্ত অধিদফতরের পাবনা গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা।

কেজি খানেক ওজনের একটি বৈদ্যুতিক কেটলি নিচ থেকে ফ্ল্যাটে তুলতেই খরচ হয়েছে প্রায় তিন হাজার টাকা। একই রকম খরচ দেখানো হয়েছে জামা-কাপড় ইস্ত্রি করার কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি ইলেকট্রিক আয়রন ওপরে তুলতে; প্রায় আট হাজার টাকা করে কেনা প্রতিটি বৈদ্যুতিক চুলা ফ্ল্যাটে পৌঁছে দিতে খরচ দেখানো হয়েছে সাড়ে ছয় হাজার টাকার বেশি।

শুধু তাই নয়; প্রকল্পটির গাড়িচালকের বেতন ৭৩ হাজার ৭০৮ টাকা, যা একজন সচিবের কাছাকাছি। বর্তমানে সচিবের বেতন ৭৮ হাজার টাকা। তবে প্রকল্পটির গাড়িচালকরা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বও পালন করতে পারবেন। এতে আরও ১৮ হাজার টাকা পাবেন গাড়িচালকরা। এতে তাদের বেতন দাঁড়াবে ৯১ হাজার ৭০৮ টাকা। প্রকল্পটির সর্বনিম্ন বেতন রাঁধুনি বা মালির। প্রকল্প থেকে তিনি বেতন পাবেন ৬৩ হাজার ৭০৮ টাকা। আর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন করলে অতিরিক্ত পাবেন ১৬ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে তার বেতন পড়বে ৭৯ হাজার ৭০৮ টাকা, যা সচিবের বেতনের চেয়েও বেশি।

পিডি/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।