বরাদ্দের টাকা সরাসরি যাবে প্রকল্প পরিচালকদের কাছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:২৮ পিএম, ২০ মে ২০১৯

উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে গতি আনতে আগামী বাজেট থেকে প্রকল্পের টাকা সরাসরি প্রকল্প পরিচালকদের কাছে চলে যাবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

সোমবার (২০ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ব্র্যাক সেন্টারে দরিদ্রবান্ধব নগর উন্নয়ন বিষয়ে প্রাক-বাজেট সংলাপ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

এ প্রাক-বাজেট আলোচনায় যোগ দেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেয়ররা। তারা সরকারের কোনো মন্ত্রণালয় বা প্রকল্পের মাধ্যমে নয়, নগর উন্নয়নে সরাসরি অর্থ দাবি করেন।

তাদের এমন দাবিকে ইতিবাচকভাবে নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বরাদ্দ সরাসরি চাচ্ছেন। ইয়েস, ভেরি ইন্টারেস্টিং। আপনারা হয়তো দেখেছেন পেপারে, আমি এখন বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে যাচ্ছি। প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলছি। কেন প্রকল্প বাস্তবায়নে অসুবিধা হচ্ছে। আপনারা বলুন, আপনাদের সমস্যা কোথায়। বরাদ্দ নিয়েই প্রধান সমস্যা ছিল। এবারের বাজেটে সরাসরি প্রকল্প পরিচালকদের কাছে ওই বছরের অর্থ বাজেটের প্রথম দিনই চলে যাবে। তার মন্ত্রণালয়েও যাবে না। আজই এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

এম এ মান্নান আরও বলেন, ‘আপনাদের কাছে দিয়ে দেয়া, খুবই ইন্টারেস্টিং। আপনারা জানেন যে, প্রতি বছর এমপিরা একটা বরাদ্দ পায়। আমি তো ১১ বছর ধরে এমপি, ১১ টাকাও দেখি নাই। কখনও আমরা টেরই পাই না কত গেছে। কোথায় কীভাবে গেছে। একইভাবে আপনাদের টাকাও যদি আপনাদের ওইভাবে দেয়া হয়। কারণ আমরাও ওটার শিকার। আমরাও চাই, অন্ততপক্ষে আমাদের কাছে বরাদ্দটা আসুক। এমপিরা চাই, সংসদে অনেকে বলেন। টাকা আমরা সরকারের হাতেই রাখব, কিন্তু এর কাজটা যখন হয়, তখন আমরা দেখব।’

অনুষ্ঠানে মেয়ররা পৌরসভার উন্নয়নে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবিও জানান। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘অনেক কথা এখানে এসেছে। আমার কাণ্ডজ্ঞান থেকে মনে হয়েছে, মূল কথা হলো টাকা চাই। আরও বেশি অর্থ চাই। কারণ আপনারা অর্থাভাবে ভুগছেন। কষ্ট হচ্ছে। দারিদ্র্য কমেছে সার্বিকভাবে। কিন্তু ভেতরে কিছু মুভমেন্ট হয়েছে। এ জন্য শহরে দরিদ্রের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। গ্রামে দরিদ্রের সংখ্যা প্রচুর কমেছে আনুপাতিক হারে।’

প্রাক-বাজেট সংলাপে আরও আলোচনা করেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ড. সলীমুল হক, ম্যাব-এর সভাপতি মো. আবদুল বাতেন এবং ব্র্যাকের নগর উন্নয়ন কর্মসূচির প্রধান হাসিনা মোশরফা, ম্যাব-এর সভাপতি ও বেড়া পৌরসভার মেয়র আব্দুল বাতেন, ম্যাব-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন প্রমুখ।

আলোচনায় অংশ নেন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এডিবি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, ডিএফআইডিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

ব্র্যাকের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহের সভাপতিত্বে সংলাপের সঞ্চালনা করেন পিপিআরসির নির্বাহী সভাপতি ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘কিছু পরিমাণে বাজেট বাড়ালেই সমাধান হবে না। শহরায়নের ঢেউ এখন গ্রামকেও সংকুচিত করে ফেলছে। তাই উন্নয়ন কৌশল নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। আলাদাভাবে দরিদ্রদের উন্নয়ন পরের কথা, সাধারণ উন্নয়নকাজও ঢিমেতালে চলে।’

ম্যাব-এর সভাপতি আব্দুল বাতেন বলেন, ‘সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করেও আমরা কুলাতে পারছি না। জাতীয় বাজেটের দুই শতাংশও বরাদ্দ না থাকলে স্থানীয় সরকারগুলো কাজ করবে কীভাবে?’

ব্র্যাকের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, ‘শহরের দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথভাবে গৃহায়ন কর্মসূচিতে অর্থায়ন করতে পারে। এ ছাড়া শহরে ক্রমবর্ধমান অভিবাসীর চাপ এবং অগ্নি দুর্ঘটনার দিকে আরও বেশি নজর দেয়া দরকার।’

পিডি/এনডিএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।